tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ০৯ অগাস্ট ২০২৪, ১৪:৩৭ পিএম

লুটপাট আগুন ঠেকাতে মাঠে বিএনপি


বিএনপি১

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারা দেশে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ডাকাতি ঠেকাতে সব সাংগঠনিক জেলায় কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি।


ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে শৃঙ্খলা কমিটি করে দায়িত্বও পালন করছেন নেতারা।

মন্দির-গির্জাসহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় রাত জেগে তারা পাহারা দিচ্ছেন। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, ধর্মীয় উপাসনালয় রক্ষাসহ অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী যে দলেরই হোক, তাদের প্রতিরোধ করতে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যুগান্তরকে বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি সারা দেশে সজাগ রয়েছে। কেউ যাতে কোনো রকম অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে-এ ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমাদের কাছে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ সমান।

বিএনপি নেতারা বলেন, গত প্রায় ১৬ বছর শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দেশের মানুষ দমবন্ধ করা একটি পরিবেশের মধ্যে ছিলেন। গুম, খুন, হামলা, মামলা, নির্যাতন ও চাঁদাবাজিতে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ ছিলেন। সেখান থেকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্যদিয়ে একটি মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

এই অবস্থায় এতদিন যারা নির্যাতন করেছেন, তাদের ওপর দেশের ক্ষুব্ধ মানুষ আক্রোশ ঝাড়ছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি, নেতাকর্মী বেশি মাত্রায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আওয়ামী লীগ নেতা হিসাবে আক্রান্ত হলেও কিছু গণমাধ্যম তাদের সংখ্যালঘু হিসাবে চিহ্নিত করে পাশের দেশ ভারতকে ক্ষুব্ধ করার চেষ্টা করছে।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহতদের তালিকা করেছে বিএনপি। নিহতদের পরিবারের খোঁজ নিতে দলটির সিনিয়র নেতারা তাদের বাড়িতে যাবেন। সামর্থ্য অনুযায়ী আর্থিক সহায়তাও করবেন তারা। আহতদের দেখতে বিভিন্ন হাসপাতালে যাচ্ছেন নেতারা। বৃহস্পতিবারও রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ইতোমধ্যে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারা। আন্দোলনে গুলিতে যারা নিহত হয়েছেন তাদের বাড়ির ঠিকানা সংগ্রহ করতে যুগ্ম মহাসচিবদের দিয়ে টিম গঠন করা হয়েছে। নিহতদের বাড়িতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যানরা যাবেন, তাদের পরিবারের খোঁজ নেবেন।

তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেসব মহান ছাত্র-জনতা শহিদ হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের আশু সুস্থতা কামনায় শুক্রবার (আজ) জুমার নামাজ শেষে সারা দেশের মসজিদে মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার নয়াপল্টনের সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি বক্তব্যে সারা দেশের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, ‘আপনারা যে যেখানে বসবাস করেন, সেখানেই আপনার বন্ধু কিংবা পাড়া প্রতিবেশী তিনি মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ধর্মীয় পরিচয় যাই হোক না কেন, বিশ্বাস যাই হোক না কেন তার নিরাপত্তায় আপনি ঢাল হিসাবে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে বসবাসকারী প্রত্যেকটি মানুষের একটিই পরিচয়, আমরা বাংলাদেশি। এই মুহূর্ত থেকে হামলা কিংবা নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে। এমনকি কেউ বিএনপির নাম ব্যবহার করে কোনো অপকর্ম করতে চাইলে তাকে ধরে আইনের হাতে তুলে দিন।’

বিএনপি নেতারা মনে করছেন, দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি গোষ্ঠী সারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে। ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের কোনো ঘটনার সঙ্গেই বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়িত নন। নেতাদের সন্দেহ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা এসব অপকর্ম করছেন। তবে এসব আর করতে দেওয়া যাবে না। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী নেতাকর্মীরা এসব ঠেকাতে পাড়া-মহল্লায় পাহারায় রয়েছেন।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিভিন্ন জায়গায় থেকে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমরা শুনতে পাচ্ছি। এসব কিছু সুযোগ সন্ধানী মহল করে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। এজন্য বুধবার থেকে ২৪ ঘণ্টা পাহারা দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।

এফএইচ