tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
সারাদেশ প্রকাশনার সময়: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:১২ পিএম

ভেসে উঠেছে বানের ক্ষত


thumbnail_IMG_20240906_125146_20240906_174141403 (1)

বন্যাকবলিত মৌলভীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় জীবনযাত্রা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। তবে ধকল কাটিয়ে আগের ছন্দে ফিরতে এখনও অনেক সময় লাগবে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে ভেসে উঠছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। বানের পানি কমে গেলেও বানভাসি মানুষের ভোগান্তি রয়েই গেছে।


প্রশাসন বলছে, ক্ষতির শিকার পরিবারের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। বরাদ্দ এলেই তাদের পুনর্বাসন করা হবে।

জানা গেছে, মনু নদের বাঁধ ভেঙে মৌলভীবাজারের রাজনগর, কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ উপজেলার অন্তত ২০টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জলমগ্ন ছিল। এরই মধ্যে বাঁধভাঙা স্রোতে শত শত মানুষের বাড়িঘর ধসে পড়েছে। ভেসে গেছে গবাদিপশু, পুকুরের মাছ। নষ্ট হয়েছে ক্ষেতের ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়কপথের।

এদিকে পানি নামতে শুরু করায় ফুটে উঠতে শুরু করেছে বন্যার ক্ষত। বসতবাড়ি মেরামতের সামর্থ্য না থাকায় অনেকেই এখনও বসবাস করছেন খোলা আকাশের। ক্ষেতের ফসল, গবাদিপশু, মাছের ক্ষয়ক্ষতিতে সরকারি সহায়তা ছাড়া ঘুরে দাঁড়ানোর আর কোনো পথ দেখতে পাচ্ছেন না বানভাসিরা।

জানা যায়, মনু নদের কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার চারটি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ এবং কমলগঞ্জ ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ১৪টি স্থানে ভাঙনে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন মানুষ। এবারের বন্যায় জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন রাজনগরের টেংরা, কামারচাক, মনসুরনগর ও কুলাউড়ার টিলাগাঁও, হাজীপুর, পৃথিমপাশা এবং কমলগঞ্জের আদমপুর, ইসলামপুর, পতনঊষারসহ আরও কিছু ইউনিয়নের মানুষ।

জেলা মৎস অফিস জানায়, চলমান বন্যায় ভেসে গেছে ৩ হাজারের বেশি পুকুর ও জলাশয়। এতে করে বন্যার পানির সঙ্গে ভেসে গেছে ৭১ লাখ টাকার পোনা মাছ।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় রোপা আমন ৪৯ হাজার ৪৮২ হেক্টর, বীজতলা ও সবজির ৫০০ একরের ওপরে জমির ফসল সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, এবারের বন্যায় এ পর্যন্ত বন্যাকবলিত গবাদি পশুর সংখ্যা ২২ হাজার ৬৯০টি। জেলার প্রাণিসম্পদ খাতে ক্ষতি হয়েছে ৮৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। তবে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই পরিমাণ আরও বাড়বে।

এদিকে মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় চলমান বন্যায় ৬টি কালভার্ট ও ১টি ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭৮ কিলোমিটার সড়ক। তবে এখনও পুরোপুরি হিসাব পাওয়া যায়নি। কারণ, বিভিন্ন জায়গায় সড়কের ওপর এখনও পানি রয়েছে। কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া উপজেলার গ্রামীণ ও আঞ্চলিক সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন জানান, আমরা পর্যাপ্ত ত্রাণ বরাদ্দ পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। দ্রুত পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা হবে।

রাজনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করেছি। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকেও তাদের বিষয়ে জানানো হয়েছে। আমরা বরাদ্দ পেলে এখানকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন সহায়তা করা হবে।

এনএইচ