আম্পায়ার এখন জুতা বিক্রেতা!
Share on:
একসময় নিয়মিত আম্পায়ারিং করেছেন। ছিলেন আইসিসি এলিট আম্পায়ার প্যানেলের সদস্য। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি আম্পায়ার হিসেবে সুপরিচিত। তিন ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে ১৭০টি ম্যাচ তিনি পরিচালনা করেছেন। এমন সুন্দর ক্যারিয়ার হুট করেই থেমে যায় নিজের দোষে।
এক মডেলকে যৌন হয়রানি এবং ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে কালিমালিপ্ত হয় তার জীবন। পাকিস্তানের সেই আম্পায়ার আসাদ রউফ এখন লাহোরের বাজারে জুতো বিক্রি করছেন।
আসাদ রউফের এই পরিণতির গল্প প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম।
২০০০ সাল থেকে শুরু করে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৪৯টি টেস্ট, ৯৮টি ওয়ানডে ও ২৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছেন রউফ। কিন্তু বর্তমানে জুতোর দোকানেই কাটে তার দিনের বেশিরভাগ সময়। এমনকি যে ক্রিকেট খেলার সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্ক, সেই খেলাটির প্রতিও আর আগ্রহ নেই তার।
সাক্ষাৎকারে রউফ বলেছেন, 'জীবনে অনেক ম্যাচে আম্পায়ারিং করেছি। আর নতুন করে কিছু দেখার নেই। ২০১৩ সালের পর থেকে খেলার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ নেই। পুরোপুরি ক্রিকেট থেকে দূরে আছি। '
২০১২ সালে রউফের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন এক মডেল। তিনি দাবি করেছিলেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন তার সঙ্গে সহবাস করেছিলেন রউফ। পরে আর বিয়ে করতে রাজি হননি।
রউফ সেই ঘটনা তখন অস্বীকার করেছিলেন। এখনো তিনি অস্বীকারই করছেন, 'মেয়েটি অভিযোগ করার পরের মৌসুমেও আইপিএলে আম্পায়ারিং করেছি। তবে এই ঘটনায় আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছিল। '
রউফের জীবনে সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছিল ২০১৬ সালে। তাকে পাঁচ বছর নির্বাসিত করেছিল বিসিসিআই। ২০১৩ সালে আইপিএলে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের সঙ্গে নাম জড়িয়ে গিয়েছিল রউফের।
অভিযোগ ছিল, জুয়াড়িদের থেকে দামি দামি উপহার এবং টাকা নিয়ে একটি নির্দিষ্ট দলের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে পর থেকেই ক্রিকেটের মূল স্রোত থেকে দূরে সরতে থাকেন রউফ। তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও আর ম্যাচ পরিচালনা করতে দেখা যায়নি।
অতীত ক্যারিয়ার নিয়ে রউফ বলেছেন, 'জীবনের সেরা সময় আইপিএলে কাটিয়েছি। ওই অভিযোগ নিয়ে এখন আর কিছু বলার নেই। বিসিসিআই নিজেরাই অভিযোগ করেছিল, নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি খুব খোলামেলাভাবে ক্রিকেটারদের সঙ্গে মিশতাম। ক্রিকেটার তো বটেই, তাদের স্ত্রীরাও বলত যে আমার সঙ্গ ক্রিকেটাররা উপভোগ করে। '
লাহোরের নাডা বাজারে এখন জুতোর দোকান চালান রউফ। এই বাজারে সস্তায় কাপড়চোপড়, জুতা ও অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়। এমনকি কিছু দোকানে পুরনো পণ্যও বিক্রি করা হয়। নিজের দোকানেও পুরনো জুতা-কাপড় বিক্রি করেন রউফ।
রউফ বলেছেন, 'আমার কর্মচারীদের জন্য এই কাজ করি। ওদের সংসার যাতে চলে, সেটার চেষ্টা করি। কোনো লোভ নেই। অনেক টাকা দেখেছি জীবনে। আমার এক সন্তান বিশেষভাবে সক্ষম। আর একজন সদ্য আমেরিকা থেকে পড়াশোনা করে ফিরেছে। ওদের নিয়েই সময় কেটে যায়। '
এইচএন