ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নেই, ছাত্রলীগ নেতার বক্তব্য ভাইরাল
Share on:
ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নেই, কোনো শক্তি নেই, এভাবেই নিজের সংগঠনকে নিয়ে এক ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় এসেছেন শরীয়তপুর জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারী।
তবে এ ছাত্রলীগ নেতার এমন কর্মকাণ্ড এবারই প্রথম নয়। এর আগেও তিনি তার বেশ কয়েকটি বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পত্রিকার পাতায় শিরোনাম হয়েছিলেন।
রোববার (১২ মে) বিকেলে উপজেলা টিএন্ডটি মোড় এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজির নির্বাচনী সভায় বক্তব্যকালে এমন বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন তিনি। তার এ মন্তব্য এরই মধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বক্তব্যের একপর্যায়ে তাকে বলতে শোনা যায়, আমরা কোনো সন্ত্রাসীকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানাতে পারি না। কেননা এ উপজেলা পরিষদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে সাধারণ মানুষের, নেতাকর্মীদের ও রাজনৈতিক সংগঠনের আস্থার জায়গা। আমরা সব সময় রাজনীতির নামে ব্যবসা করে নির্বাচনে প্রতিনিধি হয়ে রাজনীতিকে ব্যবসায় পরিণত করতে চাই। তাই সেসব লোকের থেকে আগামী নির্বাচনে দূরে থাকতে হবে। ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নেই, কোনো শক্তি নেই।
রোববার জাজিরা উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ ইদ্রিস ফরাজির পক্ষে নির্বাচনী সভায় ঘোড়া প্রতীকের আরেক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এসএম আমিনুল ইসলাম রতন সরদারের বিপক্ষে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে বক্তব্য দেওয়ার সময় ছাত্রলীগকে বড় সন্ত্রাস দল হিসেবে আখ্যা দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারী দুই সন্তানের জনক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের দায়িত্বে রয়েছেন। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি তার নেতৃত্বে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওষুধ ও আসবাবপত্রের জন্য আহ্বান করা দরপত্রের বাক্স ভেঙে দরপত্রগুলো ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি একই বছরের ৩০ মে শরীয়তপুরে আলোচিত পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় ৭২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে একত্রিত হয়ে আসামিদের মারধর করার অভিযোগ রয়েছে।
পরিচয় গোপন রাখা সত্ত্বেও জাজিরা উপজেলা এক ছাত্রলীগের নেতা বলেন, রুবেল বেপারী একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে পার পেয়ে যায়। তিনি জাজিরা উপজেলা প্রতিটি ইউনিয়ন, কলেজ কমিটিগুলোতে ব্যাপক বাণিজ্য করেন। পাশাপাশি প্রতিটি কমিটিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে তার আত্মীয়স্বজনদের পদায়ন করেছেন। এতসব অপকর্ম করেও কোনো শক্তির বলে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আদর্শের সংগঠনে তিনি টিকে থাকে।
একটি ভিডিও বক্তব্যতে এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, আমরা কোনো সন্ত্রাসীকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বানাতে পারি না। কেননা এই উপজেলা পরিষদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে সাধারণ মানুষের, নেতাকর্মীদের ও রাজনৈতিক সংগঠনের আস্থার জায়গা। আমরা সব সময় রাজনীতির নামে ব্যবসা করে নির্বাচনে প্রতিনিধি হয়ে রাজনীতিকে ব্যবসায় পরিণত করতে চাই। তাই সেসব লোকের থেকে আগামী নির্বাচনে দূরে থাকতে হবে। ছাত্রলীগের ওপরে কোনো সন্ত্রাস নাই, কোনো শক্তি নাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারির মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। এমনকি তার হোয়াটসঅ্যাপে খুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি তার কোনো উত্তর দেননি।
এদিকে অভিযোগ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেদ উজ্জামান। তিনি বলেন, বিষয়টি মাত্র আপনার মাধ্যমে শুনতে পেলাম। সে যদি এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনএইচ