tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:৪৯ এএম

বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, শীতে কাঁপছে পঞ্চগড়


16

উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত। বিগত দিনের তুলনায় কমেছে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা। কুয়াশা আর শীতে নাকাল উত্তরের জনপদ। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে সাধারন মানুষ।


তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় জেলায় তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় রেকর্ড হয়েছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি রেকর্ড হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়।

এদিকের দিনের তাপমাত্রা অনেক কমে এসেছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫-২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রেকর্ড হচ্ছে।

কদিন ধরে হাড়কাঁপানো শীত পড়ায় বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষ। ভোর ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কনকনে শীতের কারণে কাজে যেতে পারছেন না অনেকেই।

তবে পেটের দায়ে কাউকে নদীতে পাথর তুলতে, কাউকে চা-বাগানে আবার কাউকে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে।  

চা-শ্রমিক আরশেদ আলী, মমিন ও জাহেরুল ইসলাম জানান, কয়েকদিন ধরে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। সকালে চা-বাগানের পাতা তুলতে গিয়ে হাত-পাতা অবশ হয়ে আসে। তারপরও কাজ করতে হচ্ছে।

পাথর শ্রমিক কদবানু, জমিলাসহ কয়েকজন জানান, আমরা ফজরের আজানের পর পরই ঘুম থেকে উঠি। কদিন ধরে খুব ঠান্ডা। ভোরে উঠে ঘরের মেঝে, আসবাবপত্র সব বরফের মতো লাগে। তারপরও কাজ শেষ করে পেটের দায়ে পাথরের কাজে যেতে হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ ধরে জেলায় বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। আগের থেকে তাপমাত্রা অনেক নিচে নেমে এসেছে। এ অঞ্চল হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার কাছাকাছি থাকায় শীতের মাত্রাও একটু বেশি হয়।

তারা আরও জানান, সন্ধ্যার পর থেকে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীত নেমে আসে। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত শীত অনুভূত হয়। দিনেও আগের মতো গরম নেই। বিকেল গড়ালেই ঠান্ডা লাগতে শুরু করে।

এদিকে দিন-রাতে তাপমাত্রা দুই রকম থাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা।

উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।

চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। এমনিতে শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়।

শীতজনিত রোগ হিসেবে সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে। আর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত  হয়। তাই এ সময়টাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, কদিন ধরেই তাপমাত্রা অনেকটা কমেছে। আজ জেলায় তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ভোর ৬টায় রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তবে সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে চুয়াডাঙ্গায়। সেখানে আজ রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।

অপরদিকে দেশে পৌষ মাস আসতেই দেখা দিয়েছে চলতি মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। দেশের দুই জেলায় শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। মৃদু এই শৈত্যপ্রবাহ বইছে চুয়াডাঙ্গা ও রাজশাহীর ওপর দিয়ে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৫ এবং রাজশাহীতে ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

দেশে তাপমাত্রা কমে গিয়ে, বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়ছে।

আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির জানান, ‘সাগরে লঘুচাপ থাকার কারণে দেশে শীতের প্রভাব পড়তে কিছুটা দেরি হয়েছে। এখন লঘুচাপ কমে যাওয়ায় দেশের কিছু জেলায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে।

চলতি মাসের শেষ দিকে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দেশজুড়ে শীতের প্রকোপ বাড়তে শুরু করবে। আর আগামী দু-এক দিন রাতের তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। পরবর্তী সময়ে দেশজুড়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমাগত হ্রাস পেতে থাকবে।

তিনি আরও জানান, চুয়াডাঙ্গা ও রাজশাহী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

এন