রাষ্ট্র এখন যন্ত্রণার কারখানা: মির্জা ফখরুল
Share on:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকার এতটাই ফ্যাসিবাদী যে, ভয়ে সংবাদকর্মীরাও সেন্সর করে। রাষ্ট্র এখন রাষ্ট্র নেই। এটা এখন যন্ত্রণার কারখানা হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের আত্মাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে বিচারকরাই ন্যায় বিচার ধ্বংস করছে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ডিইউজের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে লজ্জা হয়, কষ্ট হয়, যখন দেখি এই ভয়াবহ সরকারকে সমর্থন দিয়ে কোনো কোনো গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং মালিক বক্তব্য দিচ্ছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা সবাই ঘোর অন্ধকারের দিকে যাচ্ছি। স্বাধীনতার সময় কল্পনাও করিনি এমন একটি সময় আমরা দেখব। আজকে গণমাধ্যমও ভাগ হয়েছে। এদিকে রয়েছেন ভয়াবহ সরকারের উচ্ছিষ্টভোগীরা, আরেকদিকে রয়েছেন গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা ফিরে পাবার সংগ্রামীরা। যারা সংগ্রামে আছেন তারা আজ নিগৃহীত। তাদের অনেকের আজ চাকরি নেই, সত্য বলার অপরাধে অনেক গণমাধ্যম আজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ মাহমুদুর রহমান, শফিক রেহমান দেশ ছাড়া।
তিনি বলেন, কয়েকদিন ঈশ্বরগঞ্জে ৩০ বছর আগের মামলায় ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সাবেক এমপি হাবিবকে ৭০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সারাদেশে বিচারের নামে চলছে অবিচার। আর এ থেকে আমাদের মুক্তি পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতিকে রক্ষা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে ৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। আজ ৫২ বছর পর এখানে দাঁড়িয়ে বলতে হচ্ছে, আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। আমরা একটা ঘোর অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। রাজপথে নেমে সমস্ত শক্তি দিয়ে ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি, বরং ঘোরতোর অন্ধকারে দেশ- এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, সবাই মিলে এক জোট হয়ে লড়াই না করলে কিভাবে বের হব তা জানি না। আজকে জাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, জাতি বিপন্ন। জাতীয় ঐক্য দরকার।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রাষ্ট্র এখন আর রাষ্ট্র নেই, রাষ্ট্র এখন যন্ত্রণা, অত্যাচার নিপীড়নের কারখানা হয়ে গেছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভগুলো শেষ। বিচারকরা নিজেরাই নিজেদের স্বাধীনতা শেষ করেছেন।
তিনি বলেন, আজকে খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন। সবাই মিলে আসুন এই দানবীয় সরকারকে বিদায় করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করি।
ডিইউজের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএফইউজের (একাংশ) সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বর্তমান সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, কবি আবদুল হাই শিকদার, কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী, ডিইউজের সহ সভাপতি রাশেদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতাদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, মিডিয়া সেলের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমবি