সীতাকুণ্ড বিস্ফোরণ, নিহত বেড়ে ৩৩
Share on:
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩-এ দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে দেড় শতাধিক। আহতদের অনেকের অবস্থা গুরুতর। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শনিবার ( ৪ জুন ) রাত সাড়ে ৯টার সময় সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় বিএম কনটেইনার ডিপোতে এ ঘটনা ঘটে। আহতদেরকে চমেক হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে আগুনে দগ্ধ অন্তত ২০ জনকে ঢামেকের বার্ণ ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে।
সর্বশেষ সকাল ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২৪টি ইউনিট ৯ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে এখনো সক্ষম হয়নি। এখনো থেমে থেমে কনটেইনার বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।
এ ঘটনায় সীতাকুণ্ডসহ পুরো চট্টগ্রাম নগরীতে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। হাসপাতালগুলোতে জায়গা সঙ্কোলান না হওয়াতে চট্টগ্রাম সেনাবাহীনির বিশেষায়িত হাসপতালেও রুগি স্থানান্তর করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন মোঃ ইলিয়াছ চৌধুরী চট্টগ্রামের সকল চিকিৎসককে হাসপাতলগুলোতে এসে চিকিৎসা কার্যক্রমে অংশ নিতে অনুরোধ করেছেন।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই কনটেইনার ডিপোতে রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে আমদানি করা একটি ক্যামিক্যাল বোঝাই কনটেইনারে আগুনের সূত্রপাত হয়। অল্পক্ষণের মধ্যেই তা বিভিন্ন কনটেইনারে ছড়িয়ে পড়ে।
সংবাদ পেয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে কুমিরা ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। রাত ১১টার দিকে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তখন হঠাৎ করে একটি কেমিক্যালবোঝাই কনটেইনারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সেখানে উপস্থিত পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস কর্মী, কারখানার কর্মী ও বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, সেখানে অগ্নিদগ্ধ ও বিভিন্নভাবে আহত শতাধিক লোককে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ৯০ জনকে দগ্ধ অবস্থায় আনা হয়েছে।
রোববার ( ৫ জুন ) ভোরবেলার দিকেও দগ্ধ ও আহত অনেককেই হাসপাতালে আনা হচ্ছিল।
সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে আশপাশে থাকা চিকিৎসকদের জরুরি ভিত্তিতে কর্মস্থলে আসার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকদের রক্ত দেয়ার জন্য আহবান জানানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা শাহিন জানান, এখনো পর্যন্ত ৩৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন চার-পাঁচজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিস্ফোরণে আশপাশের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা প্রকম্পিত হয়। বিস্ফোরণস্থলের আশপাশের শাতাধিক বাড়িঘর ও প্রায় ২০টি মসজিদের জানালা-দরজার গ্লাস ভেঙে যায়।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মোঃ ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, ক্যামিক্যালের কারণে আগুনের তীব্রতা কমছে না। থেমে থেমে এখনো কনটেইনার বিষ্ফোরণ হচ্ছে। এ বিষ্ফোরণের আগুনে কনটেইনার ডিপোর কর্মী, পুলিশ সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রয়েছেন।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি আবুল কালাম জানান, কনটেইনার ডিপোটিতে রফতানি পণ্য মজুদ রাখা হতো। আগুনের খবর পেয়ে মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
এইচএন