নীলফামারীতে জামায়াতে ইসলামীর ঢেউটিন বিতরণ
Share on:
১৬ নভেম্বর বুধবার নীলফামারীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় ১১১টি পরিবার ও জলঢাকা উপজেলায় ৭৩টি পরিবারের মাঝে মোটি ১৯৮১টি ঢেউটিন বিতরণ করা হয় এবং ডিমলা ও জলঢাকায় মোট ০৬টি নির্মিত ঘর হস্তান্তর করা হয়।
বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম এ সফর করেন। উল্লেখ্য, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ১৮ জুলাই ২০২২ বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি অসহায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সম্ভাব্য সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছিলেন।
ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে পেরে সর্বপ্রথম আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, “অসহায় মানুষের পাশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বালা-মুসিবতে অতীতে ছিলো, বর্তমানেও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। আমরা দেশের বিভিন্ন দুর্যোগকালীন মানুষের প্রাথমিক সমস্যা সমাধানে খাদ্য, চিকিৎসা, পোশাক এবং গো-খাদ্য দিয়ে সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি।
মাওলানা আবদুল হালিম আরো বলেন, আমাদের পরিচয় আমরা জনগণের সেবক, আমরা নেতা নই। বিগত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আমরা আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে যেভাবে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে সালাম পৌঁছে দিয়েছিলাম এবং সম্ভাব্য সহযোগিতার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলাম। ডা. শফিকুর রহমানের সেই প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নে আজ এই ঢেউটিন ও নির্মিত ঘরগুলো আপনাদের মাঝে বুঝিয়ে দেয়া হলো।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে রাজনীতির নামে লুটপাট চলছে। অথচ নিত্যপ্রয়োনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের নাভিশ্বাস। সরকার জনগণকে ১০ টাকায় চাল খাওয়ানোর প্রতিশ্রæতি দিয়ে ক্ষমতায় এসে ৭০/৮০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াচ্ছে। বর্তমন সরকার বিনা অপরাধে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বিশ্বনন্দিত মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ দেশের শীর্ষ আলেমদের বন্দি করে রেখেছে। তারা দেশে লুটপাট চালাচ্ছে। এ সরকার কখনো জনগণের বন্ধু হতে পারে না।
তিনি বলেন, বিপদাপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দায়বদ্ধতা থেকে আমরা সহায়-সম্বল হারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। এটি একটি মাননিক, সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কাজ। এই জাতীয় সহযোগিতা আমাদের অনুগ্রহ নয়। বরং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অধিকার। আমরা সমাজের অসহায় মানুষের প্রাপ্য অধিকারটুকু পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। দোয়া চাই, আগামী দিনেও যেন রাষ্ট্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে আপামর জনসাধারণের কল্যাণে সবসময় পাশে থাকতে পারি। আল্লাহ যেন এই ঘরগুলোকে শান্তির নীড় হিসেবে কবুল করেন। তিনি অসহায়দের পাশে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহŸান জানান।”
বিতরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন নীলফামারী জেলা আমীর মুহাম্মাদ আব্দুর রশিদ। জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার এর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম ও আনোয়ারুল ইসলাম, ডিমলা উপজেলা আমীর মাওলানা মহিউর রহমান, জলঢাকা উপজেলা আমীর ছাদের হোসেন প্রমুখ। আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা মজলিসে শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান জুয়েল, ডিমলা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মুজিবুর রহমান, জলঢাকা উপজেলা সেক্রেটারি কামারুজ্জামান, ডিমলা উপজেলা সেক্রেটারি কাজী হাবিবুর রহমান, জলঢাকা উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি মোয়াম্মার আল হোসাইন, জলঢাকার কর্মপরিষদ সদস্য মুজাহিদ মাসুম, ডিমলার গয়াবাড়ি ইউনিয়ন আমীর কাজী রোকনুজ্জামান বকুল, ছাত্রশিবিরের নীলফামারী জেলা সভাপতি মহসীন আলী সহ উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সৈয়দপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত জুয়েলের মাকে জামায়াতের অর্থ সহায়তা
চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বহুল আলোচিত নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত জুয়েলের মাকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শহরের আদানীর মোড় এলাকায় নিহত ওয়ালিউল হাসান জুয়েলের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তার মা সালমা কুলসুমের হাতে ৩০ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়। কেন্দ্রীয় জামায়াতের পক্ষে এই টাকা প্রদান করেন নীলফামারী জেলা নায়েবে আমীর ড. মোঃ খায়রুল আনাম।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের নীলফামারী জেলা মজলিসে শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য প্রভাষক আব্দুল কাদিম, সৈয়দপুর উপজেলা আমীর ও নীলফামারী-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত আসন্ন জাতীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ আবদুল মুনতাকিম, শহর আমীর শরফুদ্দিন খান, সেক্রেটারি মাওলানা ওয়াজেদ আলী, উপজেলা সহকারী সেক্রেটারী আলহাজ্ব মাজহারুল ইসলাম, নীলফামারী শহর শিবিরের সভাপতি ময়নুল ইসলাম, সৈয়দপুর পৌর শিবিরের সভাপতি মোঃ লোকমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১২টায় সৈয়দপুর-রংপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জ উপজেলার শলেয়াশাহ বাজারের অদূরে ঢাকাগামী নাইট কোচের সাথে দিনাজপুর গামী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ৯ জনসহ মোট ১১ জন নিহত হয়। এর মধ্যে জুয়েলসহ সাগর ও শাহিনের বাড়ি সৈয়দপুরে। সাগর ঘটনাস্থলে এবং জুয়েল ও শাহিন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তিকাল করেন। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
এন