tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ১৬ মে ২০২৪, ১১:০১ এএম

হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরায়েল, রাফায় বাস্তুচ্যুত ৬ লাখ মানুষ


gaza-20240516075705
ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে এখন অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির রাফা শহরে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এই শহরে ইসরায়েলি হামলা আরও জোরদার হয়েছে।


এমন অবস্থায় শহরটি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৬ লাখ মানুষ। গত ৬ মে থেকে শহরটি ছেড়ে পালিয়েছেন তারা। অন্যদিকে রাফা শহরের পাশাপাশি উত্তর গাজার জাবালিয়াতেও হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও বিবিসি।

আল জাজিরা বলেছে, গত ৬ মে থেকে রাফার প্রায় ৬ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র ফারহান হক এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই পরিসংখ্যান সামনে এনেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘গত ৬ মে থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ মানুষ - যা গাজার মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ - রাফাহ থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। কারণ সেখানে ইসরায়েলি স্থল অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

উপরন্তু জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় দক্ষিণ গাজার এই শহর থেকে ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত হওয়ার বিষয়েও আপডেট তথ্য দিয়েছে।

আপডেটে বলা হয়েছে, ‘গত ১৪ এবং ১৫ মে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উত্তর গাজার ১৯টি এলাকার বাসিন্দাদের সমস্ত বা আংশিক স্থানান্তরে দুটি নতুন আদেশ জারি করেছে। এতে করে রাফা এবং উত্তর গাজায় গত ৬ মে থেকে জারি করা আদেশের সংখ্যা পাঁচে পৌঁছাল।’

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৬ মে থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া প্রায় ৬ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার মানুষ গত ৪৮ ঘণ্টায় রাফা থেকে পালিয়ে গেছেন।

মূলত যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সতর্কতা সত্ত্বেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফাতে স্থল সৈন্য পাঠানোর কাজ অব্যাহত রেখেছে।

গাজায় সাত মাস যুদ্ধের পর ইসরায়েল জোর দিয়ে বলছে, রাফা দখল এবং হামাসের শেষ অবশিষ্ট ব্যাটালিয়নগুলোকে নির্মূল করা ছাড়া ‘বিজয় অর্জন’ অসম্ভব। কিন্তু জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলো সতর্ক করে বলেছে, রাফাতে সর্বাত্মক হামলা হলে ব্যাপক বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে এবং মানবিক বিপর্যয় প্রকট আকার নিতে পারে।

জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, শহরে ফিলিস্তিনিদের ব্যাপক বাস্তুচ্যুতির পাশাপাশি জ্বালানি, খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ শেষ হয়ে যাচ্ছে কারণ রাফা ক্রসিং বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নিকটবর্তী কেরাম শালোম ক্রসিংটিও বেশ দুর্গম।

অবশ্য ইসরায়েল গাজায় পূর্ণাঙ্গ জয় পাবে কি না, তা নিয়ে খোদ বাইডেন প্রশাসনেই সন্দেহ দেখা দিয়েছে। মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেল গত সোমবার জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনি উপত্যকা গাজায় হামাসকে পরাজিত করে ইসরায়েল ‘সম্পূর্ণ বিজয়’ অর্জন করবে বলে তেমন কোনো সম্ভাবনা বাইডেন প্রশাসন দেখছে না।

এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর জাবালিয়ায় তীব্র লড়াই হয়েছে বলে ইসরায়েলি বাহিনী এবং ফিলিস্তিনি দলগুলো বলছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জাবালিয়ার শরণার্থী শিবিরে ‘বিপুল সংখ্যক সন্ত্রাসীকে’ হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে।

এমন অবস্থায় গত শনিবার থেকে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক জাবালিয়া ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। সেসময় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছিল, তারা এই এলাকায় পুনরায় প্রবেশ করবে কারণ হামাস সেখানে পুনরায় সংগঠিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি এই আক্রমণের ফলে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং আরও প্রায় ৮০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।

এনএইচ