ভোটের পর শেয়ারবাজারে সূচকের বড় লাফ
Share on:
জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কায় একমাসের বেশি সময় ধরে নেতিবাচক ধারায় থাকা দেশের শেয়ারবাজারে ভোটের পর মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান নাম লেখানোর পাশাপাশি বেড়েছে সবকটি সূচক। সেইসঙ্গে লেনদেনের গতিও বেড়েছে।
ভোটের পর প্রথম কার্যদিবস সোমবার (৮ জানুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১০০ বেশি প্রতিষ্ঠান। আর ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে যাওয়া লেনদেন বেড়ে ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে মূল্যসূচক।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রীক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে একমাসের বেশি সময় ধরে নেতিবাচক ধারায় থাকা দেশের শেয়ারবাজার। নতুন বছর ২০২৪ সালের শুরুতেও শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়। বিনিয়োগকারীদের বিক্রির চাপে প্রায় প্রতিদিনই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। সেইসঙ্গে লেনদেন আশঙ্কজনক হারে কমে ডিএসইতে ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে যায়।
তবে ভোটের আগে শেষে কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) বিক্রির চাপ কিছুটা কমে। এতে লেনদেনের গতি খুব বেশি না বাড়লেও দাম বাড়ার তালিকায় চলে এসেছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে।
ভোটের আগে শেয়ারবাজার ইতিবাচক ধারায় ফেরার যে ইঙ্গিত দিয়েছিল, ভোটের পর প্রথম কার্যদিবসে সেই ধারা অব্যাহত থাকে। এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বেড়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির। আর ১৬৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪১ কোটি ১৩ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৪৪ কোটি ৪৫ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৯৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বিডি থাই অ্যালুমেনিয়ামের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৫৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশনের ১৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফু-ওয়াং ফুড, রূপালী ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন হাউজিং, ওরিয়ন ইনফিউশ এবং খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৬১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০টির এবং ৭২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
এনএইচ