"সুশিক্ষা ও চাকরি"
Share on:
বি.খন্দকার : লেখা-পড়া করেই যে দেশের মধ্যেই চাকরি করতে হবে এই মনমানসিকতা আপনার মধ্যে যতোদিন থাকবে আপনি ততোদিন পর্যন্ত একটি গন্ডির মধ্যেই থাকবেন। চাকরি মানেই হচ্ছে নিজের মেধাকে আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দেওয়া।
লেখা পড়া শেষ করে যে অন্য কিছুও করা যায় সেই বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণাই নাই বলেই দেশের মধ্যে বিশাল একটি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বছরের পর বছর বেকার,এর মূল কারণ সুশিক্ষার অভাব।
যারা শুধু শিক্ষা নিয়ে শিক্ষিত হয়েছে তারা সহজে এক লাইন থেকে আরেক লাইনে যেতে পারবেনা কারণ তারা কখনোই বিশ্বাস করতে চায়না যে শিক্ষা তাদেরকে দেশীয় চাকরির গন্ডি ছাড়া আন্তর্জার্তিক বাজারেও অনেকদূর পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
এখন ডিজিটাল যুগ, একটু জানাশোনা ও অভিজ্ঞতা থাকলেই আন্তর্জাতিক বাজারের যেকোনো কোম্পানিতেই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসে চাকরি করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে খুব আহামরি ডিগ্রিও নিতে হবেনা, এছাড়া বর্তমান বিশ্বের বেশিরভাগ উন্নত দেশেই কর্মী সংকট, একটু ঘাটাঘাটি করে নিজেকে প্রস্তুত করলেই কিন্তু হয়ে যায়।
আমাদের দেশের যুব সমাজের একটি বড় ভুল হচ্ছে সময় থাকতে নিজেকে আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য প্রস্তুত না করে দেশীয় সরকারি চাকরির জন্য বি.সি.এস’র পেছনে জীবনের অর্ধেক সময় অপচয় করে ফেলা। যদি পাস করে তাহলে কপাল ভালো কিন্তু যারা পাস করতে পারেনি তাদের জন্য সব দরজাই বন্ধ।
শেষমেশ দেখা যাচ্ছে কোনো একটা বায়িং হাউস নাহলে প্রাইভেট ফার্মে জব করছে এমন একটি পজিশনে যার সমন্ধে কোনো ধারণাই তার মধ্যে নেই।
যারা বলে শিক্ষা দিয়ে কি লাভ? মামা খালু বা টাকা না থাকলে চাকরি কিভাবে পাবো? আমি সোজা বলবো তাদের মধ্যে সুশিক্ষার অভাব বলেই এই কথা বের হয়।
কারণ সুশিক্ষার মূল্য সব জায়গাতেই আছে। বাংলাদেশ একটি ছোট রাষ্ট্র এবং সবকিছুই ঢাকা কেন্দ্রিক যার ফলে একটা ভেকেন্সি খালি হলে হাজারটা এপ্লিকেশন আসে।
আপনি কি জানেন আপনার মধ্যে মেধা থাকলে আপনি বাংলাদেশে বসেই বিদেশের কোম্পানি তে চাকরি পেতে পারেন এবং আপনার পরিবারসহ সেটেল হতে পারেন? এমনকি সেটেল হওয়ার জন্য প্লেনের ভাড়া থেকে শুরু করে পৌঁছানোর পর হোটেলের ভাড়া ও খাবারের খরচ সহ কোম্পানি দিবে?
বিদেশ যেতে টাকা লাগে সেই জামানা এখন আর নেই। আপনার মধ্যে মেধা ও যোগ্যতা থাকলে কিছুই লাগবেনা আপনাকে শুধু রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে এবং চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করে আবেদন করতে হবে আর এর জন্য আপনাকে শুরু থেকেই সুশিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।
আমি বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত নিজের চোখে দেখে এসেছি। এমন কোনো অফিস বা ডিপার্টমেন্ট নেই যেখানে ভারতীয়রা চাকরি করছে না এবং তারা সবাই সুশিক্ষিত। তারা কেউই লেখা পড়া শেষ করে সরকারি চাকরি বা মামা খালুর অপেক্ষায় বসে থাকেনি।
লেখা পড়ার পাশাপাশি তারা নিজেদেরকে আন্তর্জার্তিক বাজারের জন্য প্রস্তুত করেছে যার কারণে অজপাড়া গায়ে বেড়ে ওঠা ছেলেও স্কীলড মাইগ্রেশন প্রোগ্রামে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইংল্যান্ড বা আমেরিকায় গিয়ে বছরে কোটি টাকা বেতন পাচ্ছে। তাদের তো কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।
বিদেশে মামা খালুও নেই তাহলে তারা কিভাবে পারলো? কারণ তারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত তাদের মধ্যে মামা খালু অথবা বি.সি.এস’র চিন্তা নেই তারা সময় থাকতে নিজেকে প্রস্তুত করেছে। রিসার্চ করেছে তারপর নিজেকে সেই পথেই রেখেছে যেই পথ তাকে তার ভবিষ্যতের দরজা খুলে দিবে।
সর্বশেষ এটাই বলবো সুশিক্ষা গ্রহণ করুন এবং সেটাকে কাজে লাগান আপনার পথ আপনি খুঁজে পাবেন। আন্তর্জাতিক বাজারে লক্ষ লক্ষ চাকরির পজিশন মাসের পর মাস ধরে খালি পরে আছে, সেগুলো খুঁজে বের করে এক্সপার্টদের সাহায্য নিয়ে চেষ্টা করুন, আপনার মধ্যে সুশিক্ষা থাকলে চাকরি আপনার পেছনে ঘুরবে।
"মনে রাখবেন শিক্ষা শুধু বইয়ের পাতায় নয় বাস্তবের অভিজ্ঞতা থেকেও অর্জন করা যায়"
ধন্যবাদ
লেখক :
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
ইউনাইটেড গ্লোরি অব বাংলাদেশ (ইউজিবি)
এন