জ্বর নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে লাশ হলো চার বছরের হুমায়রা
Share on:
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্বরের চিকিৎসার জন্য আসা হুমায়রা নামের চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
রোববার বিকেল ৫টার দিকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
হুমায়রা মুরাদনগর উপজেলার বাবুটিপাড়া ইউনিয়নের পান্তি গ্রামের সোহাগ হোসেন সুমন এবং জান্নাত আক্তার দম্পতির মেয়ে।
হুমায়রার মা জান্নাত আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, রোববার সকাল ৯টায় হুমায়রার জ্বর ওঠে। দুপুর ২টার দিকে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক হুমায়রাকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ভর্তি দেন। ভর্তি করার পর একজন চিকিৎসক হুমায়রার পশ্চাৎদেশে একটি ইনজেকশন দেন। পরে হাতে ক্যানোলা লাগিয়ে সেখান দিয়ে দুইটা ইনজেকশন দেন।
তিনি আরও জানান, ওই ইনজেকশন দেওয়ার অনেকক্ষণ পরও হুময়ারা চোখ না খোলায় তিনি চিকিৎসকের কক্ষে গিয়ে তাকে একবার দেখে যেতে বলেন। কিন্তু চিকিৎসক তার সাথে খারাপ আচরণ করে বলেন, আপনারা পারলে তাকে কুমিল্লায় নিয়ে যান। আপনারা খুব বেশি বোঝেন।
পরে শারমিন আক্তার নামে একজন চিকিৎসক হুমায়রার ইসিজি করিয়ে আনতে বলেন। এর জন্য তাকে বাইরে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক বলেন, শিশুটি মৃত।
পরে হুমায়রাকে আবারও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। এ সময় চিকিৎসক শারমিন আক্তার হুমায়রার মৃত্যুর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে দ্রুত কুমিল্লায় নিয়ে যেতে বলেন।
জান্নাত আক্তার বলেন, তারা ভুল ইনজেকশন দিয়ে আমার মেয়েটাকে মেরে ফেলেছে। এটা হত্যাকাণ্ড। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, যতটুকু শুনেছি শিশুটির সকাল থেকেই প্রচণ্ড জ্বর ছিল। সকাল থেকে কয়েকবার খিঁচুনি আসে তার। সে কারণেই মৃত্যু হতে পারে তার। তবে চিকিৎসকদের কোনো ভুল আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা হবে।
মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এনামুল হকের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তারকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা দিয়েও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল অনুবিভাগ) মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আপনার (প্রতিবেদকের) মাধ্যমে এখনই জানলাম।
এনএইচ