ইরানে হিজাব বিরোধীদের বিরুদ্ধে জনতার ঢল
Share on:
ইরানে রাজধানী তেহরানে হিজাব আইন অমান্য করার অপরাধে পুলিশের হাতে আটক এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহের দাঙ্গার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিলে মানুষের ঢল নেমেছে। মিছিলকারীরা বিদেশিদের মদদে দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের তীব্র নিন্দা জানিয়ে স্লোগান দেন।
এর আগে গত এক সপ্তাহ ধরে ইরানের বিভিন্ন শহরে দাঙ্গাকারীরা বিভিন্ন সরকারি স্থাপনার পাশাপাশি মসজিদ, পবিত্র কুরআন ও জাতীয় পতাকায় আগুন দিয়েছে ও নারীদের মাথা থেকে জোর করে হিজাব খুলে ফেলেছে।
রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) তেহরানের শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ইরানের জাতীয় পতাকাসহ নানারকম স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন। তারা যুক্তরাষ্ট্র, ইহুদিবাদী ইসরাইল ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মদদে দাঙ্গা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহ্বান জানান।
মিছিলকারীদের উপস্থিতিতে তেহরানের একাংশের সড়ক লোকে লোকরণ্য হয়ে যায়। শান্তিপূর্ণ মিছিলকারীরা পুলিশসহ ইরানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন ঘোষণা করে বলেন, জনগণের জানমাল রক্ষা করতে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো প্রাণপণে তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
তাছাড়া মিছিলকারীরা তেহরানের সড়কগুলোতে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যদের ফুল দিয়ে অভিনন্দনও জানান। এ সময় মিছিলকারীরা একজন স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধার জানাযার নামাজে অংশ নেন। ওই যোদ্ধা তেহরানে দাঙ্গাবাজদের হাত থেকে সরকারি সম্পদ রক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে গিয়ে নিহত হন।
মিছিল শেষে এক বিবৃতিতে তারা বলেন, দাঙ্গাকারীরা ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে হিজাবের বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যেকোনো নারীকে প্রকাশ্য স্থানে হিজাব পরতে হবে। মিছিলকারীরা দাঙ্গাবাজ ও দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানে জনপরিসরে প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। পর্দাবিধি মানা হচ্ছে কি না, তা দেখভাল করে দেশটির ‘নৈতিকতাবিষয়ক’ পুলিশ। এই বিধির আওতায় নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশের একটি দল ১৩ সেপ্টেম্বর মাহসা আমিনি নামের এক তরুণীকে তেহরান থেকে আটক করে। আমিনি তার পরিবারের সঙ্গে তেহরান সফরে গিয়েছিলেন। আটকের পর আমিনি থানায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তেহরানের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন দিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়।
এন