আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে : রফিকুল ইসলাম খান
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সদ্য কারামুক্ত মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, রাষ্ট্রের পুনর্গঠন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দেশের আইনজীবীদের আরও তৎপর হতে হবে।
বিচারাঙ্গনের উন্নয়ন ও আইনজীবীদের পেশাগত মান উন্নয়নের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। আইনাঙ্গন বিচার প্রার্থীদের কাছে একটি জাগতিক আশ্রয়স্থল। যেখানে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় ভুক্তভোগীরা দারস্থ হয়। কিন্তু বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে আজ বাংলাদেশের জনগণ এক অস্বস্তিকর পরিবেশে জীবনযাপন করছে। এই ভয়ানক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আইনজীবীদের এগিয়ে আসতে হবে। আজকে উপস্থিত তরুণ আইনজীবীগণ আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিক। দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে আইনজীবী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মু. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর সদ্য কারামুক্ত মু. সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ল'ইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি এডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি এডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, এডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, এডভোকেট মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন, এডভোকেট ইউসুফ আলী সহ বিভিন্ন আইনজীবী নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াতে ইসলামী মানবতার মুক্তি ও কল্যাণকামী সংগঠন। এদেশে ইসলামের সু-মহান আদর্শের আলোকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। এজন্য জামায়াতে ইসলামীর শপথের জনশক্তি হিসেবে উপস্থিত আইনজীবীদেরকে কৃত ওয়াদার আলোকে নিজ নিজ অঙ্গণে ঐক্যবদ্ধ ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। সামনে এশিয়ার সর্ববৃহৎ বার ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। এই নির্বাচনে ঢাকা আইনজীবী সমিতিকে একটি আধুনিক ও উন্নত সুযোগ সুবিধা সম্বলিত আইনজীবী সমিতি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইসলামী মূল্যবোধ ও জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী নীল প্যানেলকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে ভুমিকা পালন করতে হবে।
অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আইনজীবীগণ স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রাম সহ জাতীয় সকল সংকটে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে বিচারপ্রার্থীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, আইনাঙ্গনে গতিশীলতা এবং আইনজীবীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে তিনি জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থীদের সহ পূর্ণ প্যানেলে নীল প্যানেলকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
মুহা. সেলিম উদ্দিন বলেন, আজ গোটা বিচারাঙ্গনের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার কথা বলা হলেও বাস্তব চিত্র তার পুরো উল্টো। অতীতে দেশের যেকোনো দুর্যোগ ও ক্রান্তিকালে আইনজীবীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমান সময়েও ইসলামের সু-মহান আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আইনজীবীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।
এডভোকেট জসীম উদ্দিন সরকার বলেন, ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্যানেলকে পরিপূর্ণভাবে নির্বাচিত করার জন্য সকল আইনজীবী ভোটারদের এগিয়ে আসতে হবে। যাতে করে এই প্যানেল বিজয়ী হওয়ার পর সততা ও নিষ্ঠার সাথে আইনজীবীদের অধিকার মান-মর্যাদা সমুন্নত রাখতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বাংলাদেশে আজ আইনের শাসন বলতে কিছু নেই। দেশের বিচার ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে আইনজীবীগণকে তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে আরো দক্ষতা প্রদর্শন করতে হবে। বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের পূর্ণ আস্থা ফিরিয়ে আনতে অবদান রাখতে হবে। বর্তমান এই ফ্যাসিস্ট, অগণতান্ত্রিক ও অনির্বাচিত সরকারের হাত থেকে দেশের আইনাঙ্গনকে রক্ষার জন্য এবং গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত ও আইনের শাসন কায়েমের লক্ষ্যে ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে নীল প্যানেল মনোনীত প্রার্থীদের নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী করার জন্য তিনি আইনজীবীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
আইনজীবী সমাবেশে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের জনশক্তি ছাড়াও ঢাকা মহানগরী উত্তর, ঢাকা জেলা উত্তর ও দক্ষিণ সহ পার্শ্ববর্তী জেলার আইনজীবী জনশক্তিরা অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য যে, আসন্ন ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচন ২০২৪-২৫ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে নীল প্যানেল থেকে সিনিয়র সহ- সভাপতি প্রার্থী হিসেবে অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক ব্যালট নং ২, সদস্য প্রার্থী হিসেবে রেজাউল হক রিয়াজ ব্যালট নং ১৮ ও মো. আরিফ ব্যালট নং ৯ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি