৩ ছেলেকে হারিয়েও অবিচল হানিয়া: বললেন, যুদ্ধের গতিপথ বদলাবে না
Share on:
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান নেতা ইসমাইল হানিয়ার তিন ছেলে ও নাতি-নাতনিদের হত্যা করেছে দখলদার ইসরাইল।
তবে একসঙ্গে তিন ছেলে ও পরিবারের সদস্যদের হারানোর পরও অবিচল রয়েছেন বর্ষিয়ান এই রাজনীতিক। ভেঙে না পড়ে বরং দিয়েছেন হৃদয়গ্রাহী বক্তব্য। যে বক্তব্য গোটা বিশ্বকে অভিভূত করেছে। সেই সঙ্গে মুসলিম উম্মাহর অন্তরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, হানিয়ার ছেলেদের লক্ষ্য করে গাজার উত্তরপূর্বাঞ্চলের শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে হামলা চালানো হলে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
ছেলে ও নাতি-নাতনিদের মৃত্যুর বিষয়টি আল জাজিরাকে নিশ্চিত করেছেন হানিয়া নিজেই। সংবাদমাধ্যমটিকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ইসরাইলি হামলায় কয়েকজন নাতি-নাতনিসহ তার তিন ছেলে হাজেম, আমির এবং মোহাম্মদ প্রাণ হারিয়েছেন। তবে সন্তানদের মৃত্যুতেও বিচলিত নন হামাসপ্রধান।
আল জাজিরাকে তিনি বলেছেন, শহীদদের রক্ত এবং আহতদের যন্ত্রণার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিরা আশা তৈরি করে, ভবিষ্যৎ তৈরি করে, মানুষ ও জাতির জন্য স্বাধীনতা ও মুক্তি তৈরি করে।
তিনি আরও বলেন, ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে গিয়েছিলেন তার ছেলেরা। ওই সময় হামলা চালানো হয়।
হামাসপ্রধান দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, নেতাদের বাড়িঘর ও পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে হামাসকে থামানো যাবে না।
তিনি আরও বলেন, কোনো সন্দেহ নেই এই শত্রুরা প্রতিশোধ, হত্যা এবং রক্তপাতে উদ্বুদ্ধ হয়েছে এবং তারা কোনো আইন মানে না। চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত তার পরিবারের ৬০ সদস্য নিহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন গাজাভিত্তিক সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
হামাসপ্রধান আরও বলেন, তার ছেলেদের হত্যার মাধ্যমে যুদ্ধের গতিপথ বদলাবে না এবং হামাস যুদ্ধবিরতির দাবি থেকে একটুও সরে আসবে না।
ফিলিস্তিনি এই নেতা আরও বলেন, যদি ইসরাইল মনে করে সন্তানদের লক্ষ্য করার মাধ্যমে এই মুহূর্তে হামাসের অবস্থান পরিবর্তন করা যাবে, তাহলে তারা ভ্রান্তিতে আছে। ফিলিস্তিনের সন্তানদের চেয়ে আমার সন্তানদের রক্তের মূল্য বেশি নয়। ফিলিস্তিনের সকল শহীদ আমার সন্তান।
গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, আল শাতি শরণার্থী ক্যাম্পে হানিয়ার ছেলেরা নিহত হয়েছেন। সেখানে বেসামরিকদের বহনকারী একটি গাড়িতে ইসরাইলি বিমান থেকে হামলা চালানো হয়। ইসমাইল হানিয়ার পরিবার-পরিজন গাজাতে থাকলেও নিরাপত্তার কারণে তিনি কাতারে বসবাস করেন। সেখান থেকেই দলটির সব কার্যক্রম পরিচালনা করেন ফিলিস্তিনি এই নেতা।
এনএইচ