tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
খেলা প্রকাশনার সময়: ২৮ অগাস্ট ২০২৪, ১২:৫৩ পিএম

মাত্র ৫ বছরে যেভাবে ক্রিকেট দুনিয়ার ক্ষমতার শীর্ষে জয় শাহ


jay-shah-bcci-20240828124756

আইসিসির ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়েসী প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের সচিব জয় শাহ। মাত্র ৩৫ বছর বয়সেই বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী ব্যক্তি হচ্ছেন এই ভারতীয়। নিজের ক্রিকেটীয় সাংগঠনিক দক্ষতার গুণে মাত্র নয় বছরের মাথায় বিসিসিআই থেকে চলে গেলেন আইসিসিতে।


মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) ছিল আইসিসি প্রধানের পদে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। জয় শাহ ছাড়া আর কেউ মনোনয়ন জমা দেননি। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আইসিসির সর্বোচ্চ পদে বসলেন এই ভারতীয়। আইসিসির ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান হলেন ৩৫ বছর বয়সী এই ভারতীয় সংগঠক।

জয় শাহের উত্থান যেভাবে

যদিও জয় শাহের শুরুটা হয়েছিল খুব সাদামাটাভাবেই। সাল তখন ২০০৯। নিজের রাজ্য গুজরাটের ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে যোগ দিলেন। একজন এক্সিকিউটিভ হিসেবেই গুজরাটের ক্রিকেটে নাম লেখান তরুণ জয় শাহ। বাবা অমিত শাহ ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রভাবশালী নেতা। সেই সুবাদেই মূলত ক্রিকেটের প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান জয় শাহ। তবে এরপরের গল্পটায় তিনি একাই ছিলেন নায়ক।

জয় শাহ সাংগঠনিক কাজে দক্ষতার পরিচয় দেখিয়েছেন শুরু থেকেই। বয়সে নবীন হলেও তিনি ছিলেন সিদ্ধান্ত গ্রহণে সিদ্ধহস্ত। খুব দ্রুতই গুজরাট ক্রিকেটে নিজের সাংগঠনিক দক্ষতার প্রমাণ দিয়ে ফেলেন এই তরুণ। এরপরেই ২০১৩ সালে এসে হয়ে যান গুজরাট ক্রিকেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

২০১৫ সালে যোগ দেন ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইতে। ২০১৯ সালে বোর্ডের সচিব হিসেবে জায়গা পাকা করে ফেলেন জয় শাহ। গুজরাটে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের নির্মাণ এবং বাজেটে নিজের মুন্সিয়ানা দেখান জয় শাহ। এখান থেকেই মূলত ভারতের ক্রিকেটের কেন্দ্রে চলে আসেন তিনি। বোর্ডের প্রেসিডেন্ট হয়ে পড়ে নামমাত্র এক পদ। জয় শাহ হয়ে ওঠেন ভারতের ক্রিকেটের একক ক্ষমতার অধিকারী।

কোভিড, ডব্লিউপিএল এবং অলিম্পিক সাফল্য

বিসিসিআই সচিব হওয়ার পরেই জয় শাহের সামনে ছিল কোভিডের চ্যালেঞ্জ। পুরো বিশ্বেই যখন ক্রিকেট ছিল বন্ধ, তখন বায়ো বাবল নিশ্চিত করে ভারতীয় ক্রিকেটকে ঠিকই চালু রেখেছিলেন। বায়ো বাবল নিশ্চিত করেই আয়োজন করা হয় দুটি আইপিএল। ২০২০ এবং ২০২১ সালের দুই আইপিএল ছাড়াও জয় শাহ আয়োজন করেছিলেন বেশ কিছু হোম সিরিজ।

এরপরেই তিনি নিয়ে আসেন ডব্লিউপিএল। নারীদের এই ফ্র্যাঞ্চাইজ লিগ নিশ্চিতভাবেই জয় শাহের কদর বাড়িয়ে দেয়। দলগুলো বিক্রি হয়েছিল ৪ হাজার ৬৬৯ কোটি রুপিতে। সঙ্গে মিডিয়া স্বত্ত্ব বিক্রি হয়েছিল ৯৫১ কোটি রুপির বিনিময়ে। দারুণভাবে সফল হয় ডব্লিউপিএল এর ধারণা।

জয় শাহর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা এতই বেড়ে গিয়েছিল, তার বিপরীতে কেউই দাঁড়াননি এবারের নির্বাচনে। এর আগে ডালমিয়া নির্বাচিত হয়েছিলেন শেষ সময়ে সহযোগী দেশগুলোর ভোটে। ২০১০ সালে শারদ পাওয়ারের বেলায় বিপক্ষে ছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। এন শ্রীনিবাসনের ক্ষেত্রে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ভোট পেলেও অনেক বোর্ডেই ছিল বিরোধিতা।

২০২১ বিশ্বকাপ আরব আমিরাতে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও বড় ভূমিকা ছিল জয় শাহর। আর সবশেষ ২০২৮ অলিম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তিতেও ভারতের এই সংগঠক ছিলেন সবচেয়ে আগ্রগামী। ভারতের বাইরেও সংগঠক হিসেবে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে জয় শাহের।

আইসিসি চেয়ারম্যানের পদে

ভারত থেকে এর আগে চার জন আইসিসির চেয়ারম্যান হয়েছেন। জগমোহন ডালমিয়া, শরদ পওয়ার, এন শ্রীনিবাসন ও শশাঙ্ক মনোহর বিসিসিআই থেকে আইসিসিতে গিয়েছিলেন। পঞ্চম চেয়ারম্যান হলেন শাহ। চলতি বছর ১ ডিসেম্বর থেকে নতুন দায়িত্ব নেবেন তিনি।

জয় শাহর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা এতই বেড়ে গিয়েছিল, তার বিপরীতে কেউই দাঁড়াননি এবারের নির্বাচনে। এর আগে ডালমিয়া নির্বাচিত হয়েছিলেন শেষ সময়ে সহযোগী দেশগুলোর ভোটে। ২০১০ সালে শারদ পাওয়ারের বেলায় বিপক্ষে ছিল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। এন শ্রীনিবাসনের ক্ষেত্রে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ভোট পেলেও অনেক বোর্ডেই ছিল বিরোধিতা।

সে হিসেবে জয় শাহ নির্বাচিত হয়েছেন কোনো প্রকার বাঁধা ছাড়াই। পরের ছয় বছরের জন্য বিশ্ব ক্রিকেটের ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকছেন থাকছেন তিনি।

এনএইচ