সজীব ওয়াজেদ জয়ের দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ ছাত্রশিবিরের
Share on:
ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের দেওয়া বক্তব্যকে মিথ্যাচার এবং ভিত্তিহীন আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান বলেন, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই নিজ দলের ভারসাম্যহীন নেতাদের মত ফেসবুক স্টেটাসে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছে। যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা, বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা করে ইত্যাদি। এ জন্য জেএমবি এবং হরকাতুল জিহাদের মতো সহিংস চরমপন্থী সংগঠনগুলোকে ব্যবহার করে।’
প্রতিবাদ বার্তায় বলা হয়, তার এ বক্তব্য বাস্তবতা বিবর্জিত, ভারসাম্যহীন প্রলাপ ছাড়া কিছু নয়। বরং এদেশের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাস হলো, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নয় বরং আওয়ামীলীগ জন্মলগ্ন থেকেই গণতন্ত্রকে হত্যা করে ফ্যাসিবাদি কায়দায় বাকশাল কায়েম ও ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতা দখল করার ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করেছে যা এখনো অব্যাহত আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর হামলা নয় বরং জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হত্যা, গুম, নির্যাতন, জেল-জুলুমের শিকার। যার সাক্ষী এদেশের জনগণ। আর রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের অপর নাম আওয়ীলীগ। অবৈধ সরকার যেমন রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে খুন,গুম, নির্যাতন করে যাচ্ছে। তেমনি আওয়ামী সন্ত্রাসীরাও নির্বিচারে হত্যা করছে বিরোধী মতের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে। এমনকি নিজ দলের নেতাকর্মীদের পর্যন্ত নির্মমভাবে খুন ও আগুনে পুড়িয়ে অঙ্গার করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। আওয়ামী বর্বরতা রক্ষা পায়নি মায়ের পেটে থাকা শিশু থেকে শুরু করে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার পর্যন্ত।
শিবির নেতৃবৃন্দ বলেন,অন্যদিকে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার প্রতিটি ঘটনার সাথেই আওয়ামীলীগের শীর্ষ ও স্থানীয় নেতাদের সম্পৃক্ততা প্রমাণ হয়েছে যা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতারাও তাদের উপর হামলার জন্য প্রকাশ্য আওয়ামীলীগকে দায়ী করে যাচ্ছে। আর জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়ে আমরা তাদের স্মরণ করে দিয়ে বলতে চাই, বাংলাদেশে জঙ্গিপনা শুরু হয়েছিল আওয়ামীলীগের আমলে এবং এ দলের শীর্ষ নেতা মির্জা আযমের ভগ্নিপতি শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাইসহ শীর্ষ জঙ্গি নেতারা ছিল তাদের নেতাদের নিকটাত্বীয়। গুলশানে হামলাকারী অন্যতম জঙ্গি রোহান আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইমতিয়াজ খান বাবুলের ছেলে। ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যান থেকে জেএমবি’র দুর্ধর্ষ তিন জঙ্গিকে ছিনতাই করা হয়েছিল ভালুকা থানা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান কামাল ওরফে যুবরাজের নির্দেশে। সরকারের তথাকথিত সাঁড়াশি অভিযানের সময়ও ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলার আসামী নড়াইল সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গাজী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার ব্যপারে নিশ্চিত করেন, নড়াইল সদর থানার ওসি সুভাস বিশ্বাস। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও জঙ্গি ফাহিমকে ছাত্রশিবিরের সাথে জড়িয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছিলেন যা পরে মাদারীপুরের পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের মাধ্যমে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছিল। তাছাড়াও জঙ্গিবাদী বহু ঘটনার সাথে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রমাণ হয়েছে। উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে আওয়ামী সর্বগ্রাসী ঘৃণ্য অপকর্ম আড়াল করতে এটা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নিকৃষ্ট ও সুপরিকল্পিত মিথ্যাচার। সত্য ইতিহাসকে বিকৃত করার এই অনৈতিক অপচেষ্টা লজ্জাজনক এবং দায়িত্বহীনতার নিকৃষ্ট নজির।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এর আগেও তিনি অনেক কাণ্ডজ্ঞানহীন রাজনৈতিক ও ভারসাম্যহীন বক্তব্য দ্বারা নিজেকে বিতর্কিত করেছেন। তার এসব বক্তব্য অন্যান্য আওয়ামী নেতাদের বক্তব্যের মতই জনগণের হাস্যরসের খোরাক হয়। যা তার বক্তব্যে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত নিউজের পোস্টের কমেন্টের দিকে নজর দিলেই প্রতিয়মান হয়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, জনগণ সজাগ এবং সচেতন। সর্বগ্রাসী আওয়ামী নিষ্পেষণে জনগণ বিপর্যস্ত ও প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। সুতরাং এসব ভারসাম্যহীন আষাঢ়ে গল্প দিয়ে আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা আড়াল করা যাবে না। নানা সময়ে আজগুবি, ভারসাম্যহীন বক্তব্যের কারণে সজীব ওয়াজেদ জয় নিজেকে ইতিমধ্যেই জাতির কাছে হাস্যকর ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আমরা আশা করি, শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে তিনি নিজের কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন। অন্যথায় তিনি তার হাস্যকর ব্যক্তিত্বের অবস্থানটি আরো পাকাপোক্ত করবেন মাত্র। প্রেস বিজ্ঞপ্তি
এমআই