১৮ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এলো ১১ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা
Share on:
চলতি বছরের জুন মাসে রেকর্ড পরিমাণ (২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার) প্রবাসী আয় এসেছিল দেশে। তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল জুনের রেমিট্যান্স। তবে পরের মাস জুলাইয়ে এসে কিছুটা কমে যায় প্রবাসী আয়। জুলাই শেষে ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বা ১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার প্রবাসী আয় আসে দেশে। জুলাই মাসের মতো আগস্টেও একই ধারা রয়েছে প্রবাসী আয় আসার ক্ষেত্রে। অর্থাৎ কিছুটা স্লো-গতিতেই আসছে রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন বলছে, চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ১৮ দিনে ১০৪ কোটি ৫ লাখ ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (এক ডলার সমান ১০৯ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ১১ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে ১০৪ কোটি ৫ লাখ ডলার বা ১১ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকার প্রবাসী আয় এসেছে। এ ধারা অব্যাহত মাস শেষে ১৮০ কোটি ডলার বা ১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে, যা গত জুলাই মাসের চেয়ে কম। জুলাইয়ে এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স।
আলোচিত সময়ে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১১ কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ১ কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৮৯ কোটি ৯০ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৬ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
তবে আলোচিত সময়ে ৮ ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা বিডিবিএল, বিশেষায়ীত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে কমিউনিটি ব্যাংক, সিটিজেন্স ব্যাংক, বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং উরি ব্যাংক।
এর আগে সদ্য বিদায়ী জুলাই মাসে ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের (১.৯৭ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় (এক ডলার সমান ১০৮.৫০ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ২১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকার বেশি। এটি আগের মাস জুনের তুলনায় প্রবাসী আয়ের পরিমাণ কমে ২২ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আগের মাস জুনে রেমিট্যান্সে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
গত জুন মাসে রেকর্ড পরিমাণ ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার (২.১৯ বিলিয়ন ডলার) প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। একক মাস হিসেবে যেটি ছিল প্রায় তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসা প্রবাসী আয়। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেকর্ড প্রবাসী আয় এসেছিল। খাত সংশ্লিষ্টদের মতে ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ সংখ্যক রেমিট্যান্স এসেছিল।
বিদায়ী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে।
সদ্য বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথম দুই মাসে দুই বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। গত অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। আগস্টে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার এসেছিল। টানা পাঁচ মাস দুই বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে আর যেতে পারেনি। অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে আসে ১৫৪ কোটি ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, জানুয়ারিতে এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ডলার আসে। মার্চ এসেছিল ২০২ কোটি ২৪ লাখ ডলার, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি ৪৯ লাখ এবং মে মাসে ১৬৯ কোটি ডলার আসে। সবশেষ ঈদুল আজহা কেন্দ্র করে জুন মাসে আসে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
এম বি