রাসূল (সা.)-এর সীরাত থেকে শিক্ষা নিয়ে দৃঢ় শপথবদ্ধ হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে : ড. রেজাউল করিম
Share on:
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম বলেছেন, “ছাত্রশিবিরকে স্রোতের সম্পূর্ণ বিপরীতে দাঁড়িয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে।
চলমান জাহেলিয়াতের স্রোতে নিজেদের ভাসিয়ে দিলে চলবে না। রাসূল (সা.)-এর সীরাত থেকে শিক্ষা নিয়ে দৃঢ় শপথবদ্ধ হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (১৬মে ) রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির আয়োজিত জাতীয় সীরাতপাঠ প্রতিযোগিতা ২০২৩-এর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান। উক্ত অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. রেজাউল করিম বলেন, “আমরা এমন এক অন্ধকার যুগে বসবাস করছি, যেখানে ঈমান নিয়ে টিকে থাকা ততটাই কঠিন; যতটা কঠিন হাতে জ্বলন্ত কয়লা ধরে রাখা। দুনিয়াপ্রীতি আমাদের এমনভাবে পেয়ে বসেছে যে, আমরা আমদের ঈমানি দায়িত্বের কথা ভুলে গিয়েছি। আমরা আল্লাহর দাসত্ব ছেড়ে দুনিয়ার মোহে মত্ত হয়ে আছি। এ অবস্থার পরিবর্তন জরুরি। ভোগবাদী এই অন্ধকার সমাজে ছাত্রশিবিরকে আলোর নকীবের ভূমিকা পালন করে যেতে হবে। দুনিয়াবি কোনো স্বার্থের পেছনে না ছুটে, খালেস নিয়তে দেশ ও জাতি গড়ার মহান দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে শিবিরের প্রধান হাতিয়ার হবে জ্ঞান, দক্ষতা ও সততা।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের শহীদেরা আমাদের অনুপ্রেরণা। শহীদ আব্দুল মালেক, শহীদ নিজামী-মুজাহিদ, শহীদ মীর কাসেম আলীসহ শহীদ নেতৃবৃন্দ আমাদের মাঝে জ্ঞান, সততা, দক্ষতা ও দৃঢ়তার নজির স্থাপন করে গেছেন। তাঁদের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জ্ঞান, দক্ষতা ও সততার সমন্বয় সাধন করে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে ছাত্রশিবির অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে, ইনশাআল্লাহ।”
বিশেষে অতিথির বক্তব্যে ড. আব্দুল মান্নান বলেন, “রাসূল (সা.) আমাদের জন্য যে আদর্শ রেখে গেছেন; সেই আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হলে একদল সোনার মানুষ তৈরি করতে হবে। সেই মানুষ তৈরির কারখানা হলো বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। তাই ছাত্রশিবিকে শুধু সীরাত পাঠ করলেই চলবে না; বরং সীরাত থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের জীবন, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে পরিচালনা করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “রাসূল (সা.) আমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনসহ সর্বক্ষেত্রে আমাদের একমাত্র আদর্শ হলো মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.)। কাজেই যারা সত্য, সুন্দর ও সঠিক পথে নিজেদের পরিচালনা করতে চান, তাদেরকে রাসূলের কাছেই ফিরে আসতে হবে। আর রাসূলের পথে আসতে হলে কুরআন-হাদিসের পাশাপাশি ব্যাপক পরিমাণে সীরাত পাঠ করতে হবে। আমরা আশা করছি, ছাত্রশিবিরের প্রতিটি জনশক্তি রাসূল (সা.)-এর সীরাতকে নিজেদের ব্যক্তিগত অধ্যয়নের রুটিনের অন্তর্ভুক্ত করবেন। সেইসাথে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠনের জনশক্তি হিসেবে ছাত্রসমাজকেও সীরাত পাঠে উদ্বুদ্ধ করবেন।”
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের শেষাংশে অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দেশব্যাপী জাতীয় সিরাত পাঠ প্রতিযোগিতা ২০২৩ আয়োজন করা হয়েছিল। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত এবং একাদশ থেকে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুইটি গ্রুপে এই আয়োজন করা হয়। এতে সর্বমোট ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার শিক্ষাবৃত্তি এবং সকল বিজয়ীদেরকে ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করা হয়।
প্রেসবিজ্ঞপ্তি//এমএইচ