tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
অর্থনীতি প্রকাশনার সময়: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:১২ পিএম

একদিনে ব্রয়লার মুরগিতে বেড়েছে ১০ টাকা, ডিমের দামও বাড়তি


dim-murgi-20240927104842

গতকাল বৃহস্পতিবারও রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছিল ১৮০ টাকা কেজি দরে।


মাত্র একদিনের ব্যবধানে আজ (শুক্রবার) সেটির এখন কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। একইসঙ্গে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিমও। অথচ এই দুই পণ্যের দামই নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। যার কোনোটিই বিক্রি হচ্ছে না বেঁধে দেওয়া সেই দামে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আজমপুর কাঁচাবাজারে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাজারের সব দোকানেই একচেটিয়া ব্রয়লার মুরগির দাম চাওয়া হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজি। এছাড়া সোনালী মুরগি ২৫০-২৬০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০-৫২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্রয়লার মুরগির দাম একদিনের ব্যবধানে ১০ টাকা কীভাবে বাড়লো এই প্রশ্নের জবাবে বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিভাবেই দাম বাড়ানো হয়েছে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে কেনা সম্ভব হলে সেটি খুচরা বাজারে প্রয়োগ করা সম্ভব হতো। কিন্তু পাইকারিতেই বাড়তি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।

চাঁন মিয়া নামের এক বিক্রেতা বলেন, গত সপ্তাহে ১৭০ টাকা কেজি পাইকারি দামে ব্রয়লার মুরগি কিনেছি। যার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে ১৮০ টাকায় ব্রয়লার বিক্রি হয়েছে। আর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ব্রয়লার পাইকারি বাজারে কিনতে হয়েছে ১৭৭ টাকা। অনেকে ১৮০ টাকা কেজিও কিনেছে। যার কারণে ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।

ফখরুল ইসলাম নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, কেউ যদি একসঙ্গে অনেক মুরগি নেয় তবে দাম কিছু ছেড়ে দেওয়া সম্ভব। এছাড়া খুচরা একটি বা দুটি মুরগি কিনলে দাম কমানো যাচ্ছে না। এতে করে আমাদেরই লস হয়ে যায়। এই মুরগি পাইকারি মার্কেট থেকে কেনার পর আবার দোকানে নিয়ে আসার জন্য আলাদা পরিবহন খরচ আছে। সব মিলিয়ে ১০ টাকা ন্যূনতম লাভ না করলে আমাদের চলে না।

অপরদিকে ডিমের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, লাল ডিম (ফার্ম) বিক্রি হচ্ছে হালি (চারটি) ৫৩-৫৫ টাকা। ডজন কিনলে গুণতে হচ্ছে ১২০ টাকা। আর এক কেইস (৩০টি) কিনলে গুণতে হচ্ছে ৪০০-৪২০ টাকা।

খুচরা দোকানের বিক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, সপ্তাহ জুড়েই ডিমের দাম এমন ছিল। বন্যার কারণে বিভিন্ন এলাকার ফার্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার কারণে বাজারে ডিমের দাম বাড়তি। মনে হচ্ছে কমতে কিছুটা সময় লাগবে।

এদিকে মুরগি ও ডিমের বাড়তি দামের কারণে ক্রেতারা পড়েছেন বেশ বিপাকে। তারা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিলেও খুচরা বাজারে তার কোনো প্রভাব নেই। বিক্রেতারা যেমন ইচ্ছা তেমন দাম নিচ্ছেন। এগুলো দেখার কেউ নেই।

আজমপুর বাজারে নূরজাহান পারভীন নামের এক ক্রেতা বলেন, বিক্রেতাদের বাহানার অভাব নেই। প্রতিটি জিনিসের দাম অনেক বেশি। সাড়ে ১৩ টাকার বেশি দিয়ে একটি ডিম কিনতে হচ্ছে। আমরা কোথায় যাবো? সরকারের উচিত এসব বিষয়ে কঠোরভাবে মনিটরিং করা। কেননা সাধারণ মানুষ খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে।

আব্দুস সালাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, গত কয়েকদিন আগেও ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা কেজি কিনেছি। আর আজকে এই মুরগি ১৯০ টাকা দাম বলছে। এরমধ্যে এমন কি হয়েছে যে, দশ টাকা দাম বাড়াতে হবে? ডিম আর মুরগির দাম বেঁধে দেওয়ার পর আরও বেশি বেড়েছে। তাহলে লাভ কী হলো?

এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সই করা এক চিঠিতে বলা হয়, ডিম খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা, সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা এবং ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি চিঠিতে মুরগি (সোনালি ও ব্রয়লার) ও ডিমের নির্ধারিত যৌক্তিক মূল্য (উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে) সঠিকভাবে বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।

নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী ডিমের মূল্য উৎপাদক পর্যায়ে ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ০১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। কেজিপ্রতি সোনালী মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ২৬০ টাকা ৭৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ২৬৪ টাকা ৫৭ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। আর কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি উৎপাদক পর্যায়ে ১৬৮ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৭২ টাকা ৬১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।

এনএইচ