শ্রীলঙ্কায় জ্বালানি বাঁচাতে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’
Share on:
অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা গতকাল সোমবার (২৭ জুন) দেশটির সেনাদের পেট্রোল স্টেশনগুলোর লাইনে দঁড়ানো মানুষকে টোকেন দিতে দেখা গেছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ গত এক সপ্তাহ ধরে কলম্বো ও এর আশপাশের অঞ্চলের স্কুল বন্ধ রেখেছে; সরকারি কর্মীদেরও পর্যন্ত ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ বা বাড়ি থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে।
গত ১৭ জুন দেশটি সরকারি কর্মীদের দুই সপ্তাহ ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করতে বলেছিল, কিন্তু জ্বালানিসংকট না মেটায় এখন ‘পরবর্তী নির্দেশ’ না দেওয়া পর্যন্ত ঘরে থেকে কাজের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ঘাটতিতে থাকা সোয়া ২ কোটি জনসংখ্যার দেশটি খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছে।
জ্বালানির জন্য টোকেন পাওয়া ৬৭ বছর বয়সি ডব্লিউ ডি শেলটন বলেছেন, ‘চার দিন ধরে লাইনে আছি। এই সময়ের মধ্যে ঠিকঠাক খেতে বা ঘুমাতে পারিনি।’ হাতে টোকেন পাওয়ার অর্থ হচ্ছে, তাকে লাইনে অপেক্ষায় থাকতে হবে, যতক্ষণ না জ্বালানি মেলে।
২৪ নম্বর সিরিয়ালে থাকা শেলটন বলেন, ‘আয় করতে পারছি না আমরা, যে কারণে পরিবারের সদস্যদের খাওয়াতেও পারছি না।’
রবিবার (২৬ জুন) শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা ভিজেসেকারা জানিয়েছেন, তাদের মজুতে এখন ৯ হাজার টন ডিজেল ও ৬ হাজার টন পেট্রোল আছে। ঐ মজুতে শিগ্গিরই তারা আরো জ্বালানি যুক্ত করতে পারবে কি না, তাত্ক্ষণিকভাবে তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
দেশটিতে গত সপ্তাহ থেকে জ্বালানি স্টেশনগুলোতে অপেক্ষারত মানুষের সারি দীর্ঘ হতে দেখা যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কা সরকার জ্বালানি দেওয়ার ক্ষেত্রে গণপরিবহন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চিকিৎসা সেবাজনিত কর্মকাণ্ডকে প্রাধান্য দিচ্ছে। কিছু পরিমাণ জ্বালানি বিভিন্ন বন্দর ও বিমানবন্দরেও দেওয়া হচ্ছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় লঙ্কার সরকার বিদেশি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে আছে। ৩০০ কোটি ডলারের একটি বেইলআউট প্যাকেজ নিয়ে কথা বলতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি দল এখন শ্রীলঙ্কা সফরও করছে।
বৃহস্পতিবার ঐ সফর শেষ হওয়ার আগে কর্মকর্তা পর্যায়ে একধরনের সমঝোতা হবে বলে দ্বীপদেশটি আশা করলেও তাত্ক্ষণিকভাবে ঐ অর্থের কিয়দংশ পাওয়ার সম্ভাবনাও খুব কম।
এইচএন