সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে: দেলাওয়ার
Share on:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. দেলাওয়ার হোসেন ঠাকুরগাঁও জেলা জজ কোর্ট শাখা আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভায় বলেছেন, সমাজ ও রাষ্ট্রে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিজ্ঞ আইনজীবীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও জেলায় আয়োজিত আইনজীবীদের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. দেলাওয়ার হোসেন একথা বলেন।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, জনগণ আজ তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত, সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এজন্য অবহেলিত জনগণের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করতে হবে। জুলুম নির্যাতনের মূলোৎপাটন করে সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে আইনজীবী বন্ধুদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি বলেন, দেশ ও বিদেশের সর্ব মহলে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জোড়ালো হচ্ছে। দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আওয়ামী দুঃশাসনের হাত থেকে জনগণ মুক্তি চায়। আমরা সেই মুক্তির জন্য আন্দোলনে নেমেছি। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের এই আন্দোলন সফল হবে ইনশাআল্লাহ। জনগণের কল্যাণে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জনগণের পাশে থেকে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যদিও বর্তমানে দেশে সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে জুলুম নির্যাতন, হিংসা বিদ্বেষ, স্বৈরাচারী সরকারের কালো থাবা চেপে বসেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন সমাজ-দেশ-রাষ্ট্রে সৎ দক্ষ ও যোগ্য নেতৃত্ব। সমাজে চেপে বসা জুলুম নির্যাতনের বিপরীতে সুখ শান্তি প্রতিষ্ঠা, সুন্দর ও আধুনিক ঠাকুরগাঁও গড়তে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জামায়াতের শীর্ষ জাতীয় নেতৃবৃন্দের অবিলম্বে মুক্তি ও দেশবাসীর কল্যাণে কাজ করার পরিবেশ করে দিতে হবে। আমাদের সাংবিধানিক অধিকার মিছিল সমাবেশ করার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আমাদের বন্ধ অফিস গুলো দ্রুত খোলার পরিবেশ করে দিতে হবে।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, দেশে এখন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুঃশাসন চলছে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে নিরীহ জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আইন আদালত সবকিছুই সরকার কুক্ষিগত করে ফেলেছে। পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক কর্মীর ন্যায় ব্যবহার করা হয়েছে। রাজনৈতিক কর্মীদের পেটানো ও মসজিদের গেইটে পাহারাদারীই যেন তাদের একমাত্র কাজ। বিতর্কিত দলীয় ব্যক্তিদের বিচারপতি নিয়োগ আর বিচার ব্যবস্থার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপে বিচার বিভাগের উপর জনগণ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, ঈমান, আক্বিদা মারাত্মক হুমকির মুখে। ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এতে ইসলামী শক্তির ও জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী কোন আইনজীবী বা সচেতন নাগরিক বসে থাকার কোন সুযোগ আছে বলে মনে করি না। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। অস্তিত্ব রক্ষায় জাতীয়তাবাদী শক্তি ও ইসলামী মূল্যাবোধে বিশ্বাসী সকলকে একযোগে এক কাতারে আন্দোলনে নামতে হবে। এছাড়া দেশ বরেণ্য আলেম-ওলামা ও জামায়াতের শীর্ষ নেতাসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের জেল, জুলুম থেকে মুক্ত করা যাচ্ছে না। বর্তমান সরকার বাকশালী কায়দায় বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করছে। যদিও ভিসা নীতি সহ নানা কারণে সরকার আজ বেকায়দা পড়েছে। এসব অন্যায়, অবিচার রুখতে দেশপ্রেমিক ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী সকল শক্তিকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল ঠাকুরগাঁও জেলা জজ কোর্ট শাখার সভাপতি এডভোকেট ইউনুস আলীসহ সিনিয়র আইনজীবী নেতৃবৃন্দ।
এমআই