কমছে তিস্তার পানি, বাড়ছে ভাঙন
Share on:
তিস্তার পানি কমতে শুরু করায় নদী পাড়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন হাজারো মানুষ। বন্যা কবলিত এলাকায় এখনও কোনো ধরনের ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় তিস্তা নদীর গর্ভে ৪২টি ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, জেলার পাঁচ উপজেলার ২০টি পয়েন্টে তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে বিলীন হয়েছে ঘরবাড়ি, মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান, ফসলি জমি, স্কুলসহ বিভিন্ন স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনা। তিস্তার ভয়াবহ ভাঙনে সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার হাজার পরিবার।
এদিকে তিস্তার পানি কমা-বাড়ার ফলে লালমনিরহাটের সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, দিঘলটারি, কালমাটি, চোংগাডারা, গোকুন্ডা, মোগলহাট আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী, পাটিকাপাড়া, সিন্দুর্না, গড্ডিমারী ও পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামসহ জেলার প্রায় ১০ পয়েন্টে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। এসব এলাকায় তিস্তার ভাঙন থেকে রক্ষা পাইনি বসতভিটে, গাছপালা ফসলি জমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
তিস্তা পাড়ের বন্যাকবলিত জাহানারা বলেন, গত দুদিন ধইরা পানির নিচে ডুবে আছি। সরকার থেকে এখনও কোনো সহযোগিতা পাইনি।
সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের চোংগাডারা গ্রামের শফিকুল মিয়া বলেন, গত তিনদিন ধরে বন্যার পানিতে কষ্ট করলাম। নদীর পানি নেমে যাওয়ায় এখন ভাঙন আতঙ্কে রয়েছি।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দীক শ্যামল জানান, গত দুদিনে আমার ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পানিবন্দি পরিবারকে নিজ উদ্যোগে শুকনো খাবার বিতরণ করছি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, তিস্তার পানি কমার পাশাপাশি নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, বন্যাকবলিত মানুষের তালিকা করা হয়েছে। এসব এলাকায় দ্রুত খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হবে। পাশাপাশি যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন তাদের পুনর্বাসন করা হবে।
এমআই