রাজধানীসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে বেড়েছে শীত
Share on:
পৌষের আগমনের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে শীতকাল। অপরদিকে দেখা দিয়েছে চলতি মৌসুমের প্রথম মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। রাজধানীসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে বৃদ্ধি পেয়েছে শীত। দু’দিনের ব্যবধানে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি কমে গেছে।
ঢাকায় শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। রোববার (১৮ ডিসেম্বর) তা কমে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
কুমিল্লায় সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। যেখানে একদিন আগেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অপরদিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় রোববার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। সোমবারও সেখানে একই তাপমাত্রা রয়েছে।
যদিও দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে কমেছে শীতের অনুভূতি। তবে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের মধ্যাঞ্চলের টাঙ্গাইল ও ফরিদপুরে কমেছে তাপমাত্রা।
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের মধ্যাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় বিরাজমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান খান।
তিনি আরও জানান, লঘুচাপটির বর্ধিতাংশ উত্তর-বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুর রহমান খান সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস তুলে ধরে বলেন, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
এসময়ে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানান এ আবহাওয়াবিদ।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) ভোর থেকে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে যায় রাজধানী। ঘন কুয়াশার কারণে কয়েক গজ দূরের জিনিস দেখা স্পষ্ট দেখা যায়নি এদিন।
রাজধানীর মগবাজার, বাংলামোটর, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট, বনানী, এয়ারপোর্ট এবং উত্তরার হাউজবিল্ডিং ও দিয়াবাড়ি এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়েছে।
যদিও শীতের প্রভাবে নাকাল অবস্থা গ্রাম অঞ্চলের মানুষের। তবে দেরিতে হলেও ডিসেম্বর মাসের শেষভাগে কলকারখানা, ইটপাথর আর দূষণের নগরী ঢাকাতেও শীতের প্রকাশ ঘটেছে।
সরেজমিনে, এদিন ভোর থেকেই কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়তে থাকে প্রকৃতি। বাংলা পৌষ মাসের তৃতীয় দিনেই ঠান্ডা প্রকৃতি আর এমন কুয়াশা এসব এলাকার শহুরে জীবনে তৈরি করেছে অন্যরকম আমেজ। তবে থেমে থাকেনি কর্মজীবী মানুষের চলাচল।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাজধানীর সড়কগুলোতে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে অফিসগামী মানুষের ভিড় দেখা গেছে। সড়কে গাড়ির চাপও ছিল স্বাভাবিক। বেলা বাড়লেও কুয়াশার আধিক্য থাকায় ঢাকার অধিকাংশ এলাকায় সূর্য মামার দেখা মেলেনি।
স্বল্পআয়ের মানুষেরা এ অবস্থায় শীতে ও কুয়াশায় অসুবিধায় পড়ার কথা জানালেন। নিউমার্কেট এলাকার রিকশাচালক রহিমুল্লাহর বলেন, শীতের দিন রিকশা চালানো খুব কষ্ট হয়ে যায়।
তিনি বলেন, নাক মুখ দিয়ে ঠান্ডা কুয়াশা ঢুকে পড়ে। পরে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। রাতে ফুটপাতে থাকতেও সমস্যা হয়। ঠান্ডার কারণে আমাদের মতো গরীব মানুষকে অনেক কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়।
রাজধানীর ভিআইপি ২৭ পরিবহনের বাসচালক আফরোজ মিয়া জানান, ঘন কুয়াশার কারণে শীতের দিনে গাড়ি চলাচল ব্যাহত হয় বলে সকালে গন্তব্যে পৌঁছাতেও অনেক দেরি হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, আগে যে সময়ের মধ্যে নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছানো যেত এখন সেটি সম্ভব হয় না। শীতের দিনে সকালে ও রাতে অনেক সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে হয়। বেশি জোরে গাড়ি চালানো যায় না।
অপরদিকে ঢাকার বাইরে থেকে দূরপাল্লার যে গাড়িগুলো ভোরে রাজ প্রবেশ করত কুয়াশার কারণে এখন সকালে আসছে। এর ফলে ঢাকার রাস্তায় জ্যাম বাড়ছে। তাছাড়া এবার অন্য বছরের তুলনায় শীতের প্রভাব বেশি।
আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে, রোববার সারা দেশে শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ও মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় অধিদফতর থেকে প্রকাশিত পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
এদিকে দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি একই এলাকায় বিরাজমান রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
এন