অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা, পাশে দাড়িয়েছে চীন
Share on:
দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিক সঙ্কট ক্রমশ গ্রাস করছে। এ অবস্থায় তারা আরো বেশি ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।
দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিক সঙ্কট ক্রমশ গ্রাস করছে। এ অবস্থায় তারা আরো বেশি ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।
বিশেষ করে অর্থনৈতিক সঙ্কট সমাধানের জন্য তারা চীন সহ আরো কিছু দেশের কাছ থেকে আরও ঋণ নেবে।
সঙ্গে সঙ্গে দ্রুততার সঙ্গেই আন্তর্জাতিক রেটিংয়ে আরেকদফা অবনমন ঘটেছে দেশটির। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এই দ্বীপরাষ্ট্রটির অর্থনীতি নির্র্ভরশীল পর্যটনের ওপর। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে সেই অর্থনীতি একেবারে পর্যুদস্ত।
সুপারমার্কেট থেকে পণ্যসামগ্রী দেয়া হচ্ছে রেশনিং করে। বিদ্যুত বিভাগ থেকে ব্লাকআউট বা লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। সেখানে তেল আমদানির মতো অর্থ নেই।
এ অবস্থায় শ্রীলঙ্কার ওই অবনমন ঘটালো এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। তারা বলেছে, দেশটির এমন অবনতিশীল পরিস্থিতিতে বৈদেশিক রিজার্ভ ধরে রাখতে সক্ষম হবে বলে মনে হয় না। ফলে দেশটির সার্বভৌমত্ব ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
এসঅ্যান্ডপি এক বিবৃতিতে বলেছে, আগামী এক বছর বা ১২ মাসে ঋণের বিপরীতে অর্থ পরিশোধ শ্রীলঙ্কার জন্য ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ, বাইরের কাছে তাদের চেহারা দুর্বল হয়ে পড়েছে।
বড় মাপের রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সরকারের ঋণ ভারি হয়েছে। মোটা সুদ দিতে হচ্ছে। অন্য আন্তর্জাতিক রেটিং বিষয়ক এজেন্সিগুলোও সতর্ক করেছে শ্রীলঙ্কার সার্বভৌমত্ব নিয়ে।
কারণ, তারা বিদেশের কাছ থেকে ৩৫০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে। কোষাগার বৈদেশিক বিনিময় রিজার্ভ নিয়ে লড়াই করছে।
কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অজিত নিবার্ড ক্যাব্রাল স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদদের জোরালো আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।
এসব অর্থনীতিবিদ আইএমএফের বেইলআউট এবং ঋণ পুনর্গঠন প্রস্তাব করেছেন। কিন্তু তা নিয়ে ভাবতে নারাজ নিবার্ড ক্যাব্রাল। পক্ষান্তরে কলম্বোতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, আইএমএফ কোনো জাদুর কাঠি নয়।
আইএমএফের কাছে যাওয়ার চেয়ে এই মুহূর্তে অন্য বিকল্পগুলো ভাল। তিনি জানান, নতুন একটি ঋণ নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা অনেকটা অগ্রবর্তী অবস্থায় রয়েছে। একটি চুক্তি হলে বেইজিং ঋণ দেবে।
তার ভাষায়, ঋণ পরিশোধের জন্য তারা আমাদের সহায়তা করবে। চীনের কাছ থেকে আসা নতুন ঋণ দিয়ে তাদের ঋণের পাওনাই পরিশোধ করা হবে।
এরই মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় ঋণদাতা হলো চীন। এখানে উল্লেখ করার কথা হলো, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মাত্র কয়েকদিন আগেই শ্রীলঙ্কা সফর করে এসেছেন।
এ সময়ে তিনি প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসের সঙ্গে ঋণ পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারপরই গভর্নর ক্যাব্রাল ওই মন্তব্য করেছেন। তবে এবার কি পরিমাণ ঋণ দিতে যাচ্ছে চীন সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি।
অতীতে চীনের কাছ থেকে খুব বেশি অর্থ ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দক্ষিণে একটি বন্দর নির্মাণে নিয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। সেই ঋণের বিপরীতে অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না তারা।
এর প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে ৯৯ বছরের জন্য ওই বন্দরটি চীনের একটি কোম্পানির কাছে লিজ দিতে বাধ্য হয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সতর্ক করেছে যে, হাম্বানতোতা বন্দর হতে পারে ভারত মহাসাগরে চীনা সেনাবাহিনীর পা রাখার একটি সুযোগ।
এইচএন