ওহির জ্ঞানে জ্ঞানীরাই পৃথিবীকে আলোর পথ দেখাতে পারে: আযাদ
Share on:
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, ওহির জ্ঞানে প্রতিযোগিতায় যারা সেরা, আগামীর পৃথিবীকে তাঁরাই আলোর পথ দেখাবে।
আজ সোমবার রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে আয়োজিত সদস্য মেধা যাচাই পরীক্ষার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। এ সময় কার্যকরী পরিষদ ও সেক্রেটারিয়েট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, বহুকাল থেকেই ছাত্রশিবির সিরাতুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়োজনটি করে আসছে এবং সকল পরিস্থিতিতেই এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে। আসলে প্রতিযোগিতাটি হলো জ্ঞানের প্রতিযোগিতা। দুনিয়াতে প্রকৃত অর্থে সফল হতে চাইলে তাকে জ্ঞানে সফল হতে হবে। প্রথম মানব ও প্রথম নবী আদম আ. জ্ঞানের প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিলেন। সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরও নবুয়ত শুরু হয়েছে ইকরা বা জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, মুসলমানদের জন্য জ্ঞানার্জন আবশ্যকীয়। ঈমান আনতে হলেও জ্ঞান লাগবে আবার ঈমানের ওপর টিকে থাকতে হলেও জ্ঞান লাগবে। কারো জীবনে গোমরাহি হানা দিলে জ্ঞান সেই গোমরাহি থেকে রক্ষা করবে। আর সকল জ্ঞানের সেরা জ্ঞান হলো ওহির জ্ঞান। আজকে ওহির জ্ঞানে শিবিরের সদস্যরা মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। ওহির জ্ঞানে প্রতিযোগিতায় যারা সেরা, আগামী দিনের পৃথিবীতে তাঁরা মানুষকে আলোর পথ দেখাবে। জ্ঞানের চর্চা অব্যাহত রাখলে সাফল্য ধরা দেবে। তবে শুধু জ্ঞান দিয়ে সাফল্য চূড়ান্ত আসবে না। এর সাথে আমল ও ইখলাসের সমন্বয় করতে হবে। আর জ্ঞানচর্চা, আমল ও আখলাকের মূল উদ্দেশ্যে হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দ্বীন বিজয়ের প্রচেষ্টা। মুমিনের জন্য দ্বীনের বিজয় মূল সাফল্য আর পরকালের নাজাত হলো চূড়ান্ত সাফল্য। মুমিন দুনিয়া ও আখেরাত উভয় ক্ষেত্রেই সফল হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, শুধু ইলম বা জ্ঞান অর্জনই নয়; বরং জ্ঞানের দাবিও পূরণ করতে হবে। প্রথমত, ইলমের সম্মানই হলো আমল। ঈমানদার ইলমের আলোকে আমল দিয়ে দ্বীনকে প্রকাশ করবে। জ্ঞান যদি আত্মগঠনে ও নিজের পরিবর্তনে কাজে না লাগে, তাহলে সে জ্ঞানের কোনো মূল্য নেই। সবার আগে নিজের নফসের সাথে বিজয়ী হতে হবে। একই সাথে ইলমের দাবি হলো সর্বক্ষেত্রে ধৈর্যের পরাকাষ্ঠা ও সুদৃঢ়তা প্রদর্শন করা। সর্বোপরি ইলমের দাবি হচ্ছে জমিনে আদালত বা ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। যারা জ্ঞানের রাজ্যে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, তাদের আত্মতৃপ্তিতে ভোগা যাবে না। জ্ঞানের স্তর বাড়ার সাথে সাথে বিনয়ী হতে হবে এবং আরো জানার জন্য আগ্রহী হতে হবে। নিজের ভুলকে আত্মস্বীকৃতি দিতে হবে। নিজেকে সব সময় জ্ঞানান্বেষীই মনে করতে হবে। কোনোভাই আত্মঅহংকারী হওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আজকের মেধা যাচাই পরীক্ষায় বিজয়ীদের মনে রাখতে হবে, এ জ্ঞান অর্জনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে মূলত আল্লাহ তায়ালার একটি নির্দেশ পালন করা হয়েছে। আর সে নির্দেশ পালনে সর্বোচ্চ স্তর হচ্ছে আদালত বা আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা। মহান আল্লাহ আমাদের দ্বীনের সৈনিক হিসেবে কবুল করুন।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান বলেন, দেশের সংকটাপন্ন এ সময়েও মহান আল্লাহ এমন সুন্দর একটি আয়োজন করার সুযোগ দিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ। কার্যকরী পরিষদের সদস্যবৃন্দ ছাড়া বাকি সকল সদস্যই এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা মনে করি, যারা জ্ঞানের প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন, তাঁরা জ্ঞানকে ধারণ, জ্ঞানের রাজ্যে নেতৃত্ব দেওয়া ও জনশক্তি এবং তরুণদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করবেন। একইভাবে ময়দানে আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। আমরা বিশ্বাস করি, জ্ঞানচর্চা ও আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের মাধ্যমে আজকের মেধাবীরা আগামী দিনের ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবে, ইনশাআল্লাহ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি