tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
সারাদেশ প্রকাশনার সময়: ২০ মে ২০২৪, ১২:৩১ পিএম

হাসপাতাল নয় যেন গারদখানা


hospital-20240520104033

নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চলছে ভবন নির্মাণের কাজ। পাঁচ বছর আগে শুরু হওয়া এই কাজের ধীরগতির কারণে ভোগান্তিতে কাটছে রোগীদের জীবন। কেবল নোয়াখালী নয় পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রোগীরাও সেবা নিতে আসেন এই হাসপাতালে। কিন্তু বর্তমানে হাসপাতালটি যেন গারদখানায় পরিণত হয়েছে।


জানা যায়, ২০২০ সালে শুরু হয় ৬ তলা বিশিষ্ট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আধুনিক ভবন নির্মাণকাজ। পরে ৭ তলার কাজ বর্ধিত করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নুর নবী ট্রেডার্সের ২০২২ সালের জুন মাসে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সে সময়ের মধ্যেও কাজ বুঝিয়ে দিতে না পারায় প্রায় ৭০ লাখ টাকা এবং ওই ভবনের কাজের জন্য ৩৫ লাখ জরিমানা করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। এছাড়া কালো তালিকার প্রস্তাবনা ও কাজ বাতিলের সুপারিশ করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নুর নবী ট্রেডার্স ও রিষাদ ট্রেডার্স নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গাফিলতি করেই যাচ্ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী। খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে হাসপাতালের বিভিন্ন সামগ্রী। নতুন ভবন না হওয়া টিনশেডে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। হাসপাতালে রোগীর উপচে পড়া ভিড়। ভর্তি রোগীরা সিট না পেয়ে থাকছেন মেঝেতে।

হাতিয়া উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আরিফুল ইসলাম বলেন, এত বড় জেলার জন্য মাত্র ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল। অথচ এটা গারদখানার থেকেও খারাপ অবস্থায় আছে। দেখার কেউ নেই। ডাক্তারের সেবা নেওয়া যাচ্ছে না আবার ভর্তি রোগীরা সিটও পাচ্ছে না। সব মিলিয়ে খুবই নাজুক অবস্থা।

লক্ষ্মীপুরের রামগতি থেকে আসা মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, চিকিৎসা সেবা নিতে আমাদের লক্ষ্মীপুর জেলা হাসপাতাল যাওয়ার থেকে নোয়াখালী হাসপাতালে যাওয়া সহজ। তাই আমরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসি। কিন্তু ঠিকমতো ভবনের কাজ না করায় আমরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ি। দেখার কী কেউই নেই? সুস্থ মানুষও এখানে এসে অসুস্থ হয়ে যায়। এত ভয়াবহ অবস্থা।

নোয়াখালী নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য সচিব জামাল হোসেন বিষাদ বলেন, নোয়াখালীর প্রায় অর্ধকোটি মানুষের জন্য মাত্র ২৫০ শয্যার হাসপাতাল। এছাড়া লক্ষ্মীপুর জেলা থেকেও মানুষ সেবা নিতে আসে। তারপর এটির অবস্থা ভয়াবহ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে ভোগান্তির শেষ নেই। আমরা নাগরিক সেবা নিশ্চিতের জন্য দ্রুত হাসপাতালের ভবন নির্মাণ চাই।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, ভবন নির্মাণের ধীরগতির বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন সবাইকে জানিয়েছি। আমরা নিরুপায়। শয্যার বেশি রোগীকে সেবা দিতে এসে আমরা হিমশিম খাই। অতিরিক্ত রোগীদের আসলেও আমরা সেবা দিতে পারছি না। তবে ঠিকাদার যদি দ্রুত কাজটা বুঝিয়ে দিতে পারে তাহলে আমাদের সেবা দিতে খুব উপকার হয়।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে আমরাও বিড়ম্বনার মধ্যে আছি। এটা নিয়ে আমাদের একাধিক সভা হয়েছে। মানুষ যেন দ্রুত সেবা পায় সেটাই এখন আমাদের লক্ষ্য। আমাদের বাড়ি নোয়াখালী না হলেও আমরা নোয়াখালীতে দায়িত্ব থাকায় এই জেলাকে আপন মনে করি। নোয়াখালীর উন্নয়ন হলে সার্বিকভাবে নোয়াখালীকে মানুষ ভালো বলবে। বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভেবে আমাদের জেলার জন্য কাজ করা উচিৎ।

এনএইচ