কৃষককে লাইনে দাঁড় করিয়ে সার বিক্রি করা যাবে না
Share on:
সারে কারসাজি রোধে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে ভার্চুয়ালি ‘সার্বিক সার ও সেচ পরিস্থিতি পর্যালোচনা’ সভায় সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম।
সভায় কৃষককে লাইনে দাঁড় করিয়ে সার বিক্রি না করা, রশিদ ছাড়া সার বিক্রি না করাসহ কয়েকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সার নিয়ে কৃষকদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কৃষিসচিব বলেন, দেশে পর্যাপ্ত সার মজুত রয়েছে। গুজবে কান দিয়ে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না।
সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) রবীন্দ্রশী বড়ুয়া, বিএডিসির চেয়ারম্যান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিসিআইসির চেয়ারম্যান, সব জেলা প্রশাসক, সারাদেশের মাঠপর্যায়ের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।
সভায় জেলা প্রশাসক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকরা সারের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তারা জানান, মাঠপর্যায়ে পর্যাপ্ত সার রয়েছে। সারের কোনো সংকট নেই। তবে সারের দাম বাড়বে বলে গুজব ও কোনো কোনো জায়গায় বিভ্রান্তিকর তথ্যের কারণে সারের বিষয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে। এছাড়া কৃষকের মধ্যেও সার মজুতের প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সভায় সারের কারসাজি রোধে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। রশিদ ছাড়া যেন সার বিক্রি না হয় তা নিশ্চিত করা, ডিলার ও খুচরা বিক্রেতার দোকানে লালসালুতে বা ডিজিটালি সারের মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখা নিশ্চিত করা, খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সার সরবরাহ নিশ্চিত করা। কৃষককে যেন লাইনে দাঁড়িয়ে স্লিপ দিয়ে সার কিনতে না হয়, তা নিশ্চিতের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এছাড়া ডিলারের গুদাম পরিদর্শন করে সারের অ্যারাইভাল নিশ্চিত ও ট্রাক চালানের সঙ্গে তা যাচাই করে দেখা, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কৃষি বিভাগ নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা এবং নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সার বরাদ্দের সঙ্গে সঙ্গেই বিসিআইসি থেকে সার উত্তোলনের অনুমতি দেওয়ার জন্য বিসিআইসি চেয়ারম্যানকে পরামর্শ দেওয়া হয়।
সভায় জানান হয়, চাহিদার বিপরীতে দেশে সব রকমের সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। বর্তমানে ইউরিয়া সারের মজুত ছয় লাখ ৪১ হাজার টন, টিএসপি চার লাখ ১৫ হাজার টন, ডিএপি ৯ লাখ চার হাজার টন, এমওপি দুই লাখ ৪৬ হাজার টন।
বর্তমান মজুতের বিপরীতে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সারের চাহিদা হলো ইউরিয়া তিন লাখ ৫০ হাজার টন, টিএসপি ৯৬ হাজার টন, ডিএপি দুই লাখ ১৯ হাজার টন, এমওপি এক লাখ ২১ হাজার টন।
বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় সারের বর্তমান মজুত বেশি। বিগত বছরে এ সময়ে ইউরিয়া সারের মজুত পাঁচ লাখ ৯৯ হাজার টন, টিএসপি দুই লাখ ১৩ হাজার টন, ডিএপি ছয় লাখ ৭৩ হাজার টন এবং এমওপি এক লাখ ৮১ হাজার টন ছিল বলেও জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
এমআই