tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:০৪ পিএম

একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ গঠনে নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে: হেলাল উদ্দিন


৩৩

বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ গঠনের জন্য নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে।


শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে হাজারীবাগ চ্যারিটেবল সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘সুন্দর হস্তাক্ষর ও বানান শুদ্ধকরণ’ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সোসাইটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম সোহেলের সভাপতিত্বে ও হাসান আল বান্নার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নুর নবী মানিক ও সমাজসেবক আব্দুর রহমান সহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ।

অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। ৫২’র ভাষা আন্দোলন ছিল নিজ ভাষায় কথা বলার অধিকারের আন্দোলন। ইসলামের ভিত্তিতে বৃটিশদের থেকে এদেশ ভাগ হলেও পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করেনি। বরং তারা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের সাথে বৈষম্য মুলক আচরণ শুরু করে। ফলে পাকিস্তানের ২৩ বছর শাসনামলে এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়েছিল। এমনকি তারা আমাদের মায়ের ভাষা বাংলাকে উপেক্ষা করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে সর্বপ্রথম ১৯৪৮ সালে তমদ্দুন মজলিস আন্দোলন শুরু করে। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকবৃন্দ এ আন্দোলনে শরিক হয় এবং ডাকসু আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করে। ডাকসুর তৎকালীন জিএস অধ্যাপক গোলাম আযম ডাকসুর পক্ষ থেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের কাছে রাষ্ট্রভাষা বাংলা ও পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করেন। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মর্মান্তিক ট্রাজেডির মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

তিনি আরও বলেন, যে ভাষা রক্ষায় আমাদের ছাত্রজনতা রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে কার্পণ্য করেনি সে ভাষা, সংস্কৃতি আজ বিজাতীয় আগ্রাসনে ক্ষত-বিক্ষত ও জর্জরিত। আজকে ইতিহাসকে বিকৃতি করে উপস্থাপন করা হচ্ছে। ইতিহাসের বিকৃতি অন্যায়, অগ্রহনযোগ্য। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের বলেন, তোমাদেরকে সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। ইতিহাসে যারাই অবদান রেখেছেন তাদের প্রত্যেকের অবদানকে মূল্যায়ন করে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশ গঠনের জন্য নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নুরুন্নবী মানিক বলেন, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস আজকে বিকৃত করা হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন অধ্যাপক গোলাম আযম। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় তিনি ১৪ মার্চ গ্রেফতার হয়েছিলেন। আমাদের দেশে প্রতিবছর বিভিন্ন অবদানের জন্য একুশে পদক দেওয়া হয়। তিনি ভাষা আন্দোলনের অন্যতম রূপকার অধ্যাপক গোলাম আযমকে একুশে পদক দেওয়ার জোর দাবি জানান ।

সভাপতির বক্তব্যে শহিদুল ইসলাম সোহেল বলেন, আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি ও বাংলা ভাষাকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে, ছাত্র-ছাত্রীদের সফল জীবন গঠনের জন্য ভালো ছাত্র ও ভালো মানুষ হওয়ার আহ্বান জানান।

প্রতিযোগিতায় বিজয়ী যারা :

“ক” বিভাগ- প্রথম স্থান : হাফসা হাবিব রূপন্তি (চতুর্থ শ্রেণি, ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুল), দ্বিতীয় স্থান : নূর-ই-জান্নাত সাফারিন (তৃতীয় শ্রেণি, ধানমন্ডি আইডিয়াল স্কুল), তৃতীয় স্থান : নুসরাত জাহান জেরিন (পঞ্চম শ্রেণি, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ)।

“খ” বিভাগ- প্রথম স্থান: ফাতেমা তুস সাবা (ষষ্ঠ শ্রেণি, দারুল কোরআন মডেল মাদ্রাসা), দ্বিতীয় স্থান: হাজিদা আমরিন (সপ্তম শ্রেণি, ন্যাশনাল ব্যাংক পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ), তৃতীয় স্থান : সানিয়া আক্তার (অষ্টম শ্রেণি, রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়)।

এমআই