tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩৫ পিএম

হাছান মাহমুদের সঙ্গে অজিত দোভালের আলোচনায় মিয়ানমার প্রসঙ্গ


prothomalo-bangla_2024-02_a81011c3-c2df-4460-9796-3f25eaa8dbc8_Untitled_2

মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ক্রমেই বাংলাদেশ ও ভারতের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের ভারত সফরে মিয়ানমার প্রসঙ্গ বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে।


বুধবার(৭ফেব্রয়ারি) সকালে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠকে মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ভারত-বাংলাদেশ একযোগে কাজ করবে। এ বিষয়ে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পরে বিস্তারিত কর্মপদ্ধতি ঠিক করা হবে।

ভারতের আমন্ত্রণে দিল্লি এসে হাছান মাহমুদ বুধবার সকালে প্রথমেই অজিত দোভালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারপর তিনি যান রাজঘাটে, জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে। সন্ধ্যায় হায়দরাবাদ হাউসে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন।

দোভাল গত রোববার ঢাকা গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই সফর আগে থেকে স্থির ছিল না। সেই সফর নিয়ে কোনো দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে যেসব ভারতীয় রয়েছেন, তাঁরা যেন এখনই সেখান থেকে অন্যত্র চলে যান।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যেসব ভারতীয় নাগরিক রাখাইন যাওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁরা যেন কেউ সেখানে না যান। ওখানকার পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। সব ধরনের টেলিযোগাযোগব্যবস্থা বিপর্যস্ত। এমনকি ল্যান্ড লাইনও অকেজো হয়ে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘোর আকাল শুরু হয়েছে। কাজেই সে দেশে না যাওয়াই শ্রেয়।

কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশ, ভারত ও চীন সীমান্তবর্তী মিয়ানমার এলাকায় সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াই করছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। সামরিক শাসকের দখলে থাকা অনেক এলাকার নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে।

এই সংঘর্ষের প্রভাব পড়েছে প্রধানত ভারতের মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও বাংলাদেশের কক্সবাজার–বান্দরবান এলাকায়। মিয়ানমারের নাগরিকেরা পালিয়ে চলে আসছেন দুই দেশেই। গোলাগুলি আছড়ে পড়ছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়। হতাহতের ঘটনাও ঘটছে।

দুই দেশের সংকট একই ধরনের। এর মোকাবিলা যৌথভাবে করা যায় কি না, কিংবা করা গেলেও কতটা—সেসব বিষয় এবারের সফরে আলোচনায় থাকতে পারে। গত সপ্তাহে দোভালের ঢাকা সফরের পর হাছান মাহমুদের ভারত সফর সেই ধারাবাহিকতারই অঙ্গ।

মিয়ানমার তৃতীয় পক্ষ হলেও বাংলাদেশ–ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় সেখানকার পরিস্থিতি হবে প্রধান। বাংলাদেশ এমনিতেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে ব্যতিব্যস্ত। একই সমস্যায় ভারতও জর্জরিত।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নতুন করে অস্থিতিশীল করে তুলেছে ভারতের উত্তর–পূর্বের পরিস্থিতি। অসামরিক ও সামরিক শরণার্থীর স্রোত বন্ধ করতে মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু মণিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে বিরোধিতা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষেও মিয়ানমারের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়ে উঠেছে নতুন ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ।

এসএম