আন্দোলনের পটভূমি তৈরি করেছে বিএনপি : আমীর খসরু
Share on:
হাসিনা গুলি করে, সমাবেশ বন্ধ করে, ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। তারেক রহমানের নেতৃত্বে সমস্ত দেশ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কারণে শেষ ধাক্কা যখন দিয়েছে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে।
আমরা এতদিন সেই পটভূমি যদি তৈরি না করতাম, এই অবস্থার সৃষ্টি না করতাম, শেখ হাসিনাকে ধাক্কা দিয়ে সরানোর সুযোগ ছিল না। আমাদের সাথে তো তখন কেউ আসেনি।’
শনিবার বিকেলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে র্যালি পূর্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় বিএনপির চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার নেতাকর্মীদের মধ্যে নগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, নগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, নগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিন দুপুরের পর থেকেই নগরী ও উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার-হাজার নেতা-কর্মী সমাবেশে যোগ দেন।
সমাবেশে আমীর খসরু আরও বলেন, ‘১৫ বছরে আমরা বার বার জেলে গিয়েছি। আমাদের নেতা-কর্মীদের বাড়ি ঘর ফেলে পালিয়ে থাকতে হয়েছে, চাকরি হারাতে হয়েছে, পঙ্গু হতে হয়েছে, গুম-খুনের শিকার হতে হয়েছে। তোমরা কোথায়? আমরা এসবের হিসাব করতে চাচ্ছি না। আমরা চাচ্ছি সবাই মিলে দেশের গণতান্ত্রিক অর্ডার্স ফিরিয়ে আনবো। জনগণের ভোটে জনপ্রতিনিধিরা সংসদে যাবে। যেখানে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কবে নির্বাচন হবে এই বয়ানের মধ্যে নাই। বাংলাদেশের জনগণ কবে ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচন করবে সেই বয়ানে নাই। সহসা সমাধান করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। জাতি তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি দেখতে চায়। শেখ মুজিবুর রহমান বয়ান দিয়ে কিছুদিন স্বৈরাচারী রাষ্ট্র চালিয়েছে। ওই বয়ানে ছিল, বাংলাদেশকে এখন এক না করলে দেশটা চলবে না, থাকবে না। এই বয়ান দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান দেশ চালিয়েছিল। সেটা থাকে নাই। জনগণের সমর্থন ছাড়া কিছু টিকে থাকে না। পরবর্তীতে হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ আরেক বয়ান দিয়েছেন। তবে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে তাকে আমরা পরাজিত করে পাঠিয়ে দিয়েছি।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, ‘৬ বছর আগে বেগম খালেদা জিয়া সংস্কারের কথা বলেছিলেন। আমরা জনগণের কথা বুঝেছি বলে আমরা দিয়েছি। এক বছর আগে তারেক রহমানের নেতৃত্ব আমরা সবাই একটি নতুন সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি। ওই সংস্কারে সবকিছু আছে। কিছু বাকি নেই।
আপনারা যা বলেছেন, তাও আছে; তার বাইরে আছে। সংস্কারে আপনাদের চেয়ে আরো বেশি আছে। নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ হবে তারা সিদ্ধান্ত নিবে, সরকার সিদ্ধান্ত নিবে। এর বাইরে অনির্বাচিত কারো কোনো অধিকার নেই। জাতীয় ঐক্যমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে যতটুকু হবে সহসা সমাধান করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। জাতি তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি দেখতে চায়। তাদের নির্বাচিত সরকার দেখতে চায়। এ কারণেই ঐক্য ঘটানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘৭ নভেম্বর ছিল সিপাহী জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে শহীদ জিয়াকে মুক্ত করার মাধ্যমে এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা। সে বাংলাদেশ হলো বহুদলীয় গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বাংলাদেশ, মুক্ত বাজার অর্থনীতির বাংলাদেশ, আইনের শাসনের বাংলাদেশ, জীবনের নিরাপত্তার বাংলাদেশ, স্বাধীন সার্বভৌম মাথা উঁচু করার বাংলাদেশ। সেই ধারা অব্যাহত রেখেছিল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে তিনি স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছেন।’
আওয়ামী লীগ ও ফ্যাসিস্টরা উঁকিঝুঁকি মারছে, এই ঐক্য ভাঙা যাবে না উল্লেখ করে খসরু আরো বলেন, এ সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। তাদের আমরা সমর্থন দিব, তাদের আমরা শেষ পর্যন্ত সমর্থন দিব। আমরা এ সরকারকে যখন আসা মাত্রই সমর্থন দিয়েছি, এ সরকারকে আমরা এখনো সমর্থন দিচ্ছি। আমরা চাই এ সরকার গণতন্ত্রের অধিকার ফিরিয়ে আনবে। তার জন্য আমরা সকলে মিলে কাজ করব। আমাদের ঐক্য নষ্ট করা যাবে না। তারেক রহমান যে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন তা অটুট থাকতে হবে। ঐক্য অটুট রেখে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে যেতে হবে, নির্বাচনের দিকে যেতে, নির্বাচিত সরকারের দিকে যেতে হবে।
বিকেলে চারটায় নগরীর কাজির দেউরি মোড় থেকে বিএনপির র্যালি শুরু হয়ে নগরীর নিউ মার্কেট গিয়ে শেষ হয়। নগরী ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা ফেস্টুন-ব্যানার নিয়ে র্যালিতে যোগ দেয়।
এসএম