সেপ্টেম্বরে আখেরি লড়াই শুরু হবে: গণতন্ত্র মঞ্চ
Share on:
সরকার উন্নয়নের নামে লুটপাট করছে। স্পারসোর মতো সংগঠন চন্দ্রযান পাঠানো বাদ দিয়ে শোকসভা করে ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। সরকারের শেষ সময়ে সালমান এফ রহমান বিশেষ বিবেচনায় ২২ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে ফোকলা করে দিচ্ছে সরকারের ভাই-ব্রাদাররা। সরকারের বিরুদ্ধে সেপ্টেম্বর মাসে আখেরি লড়াই শুরু হবে।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনের সড়কে গণমিছিল শুরুর আগে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন বক্তারা। দমন, নিপীড়ন, গ্রেপ্তার ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এবং সরকারের পদত্যাগ ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, সরকার অগণতান্ত্রিকভাবে দেশকে একদম সর্বশেষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তারা কারো কাছে জবাবদিহি করে না। এই সরকার অবিচারক, তাদের কাছে বিচার চেয়ে কোনো লাভ হবে না। সরকার উন্নয়নের নামে লুটপাট করছে। যারা অফিস টাইমের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা লুটপাট করেছে, তারা এখনো ওই ব্যাংকে আছে। তাদের সরানো হয়নি। যারা ব্যাংক থেকে লুটপাট করে তাদেরই আবার উপদেষ্টা বানানো হয়। আপনারা মনে করছেন সরকার কি এসব বিষয়ে জানে না, অবশ্যই জানে। এখন গণজাগরণ হয়েছে, ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, পেশাজীবী সবাইকে নিয়ে গণঅভ্যুত্থান করে তাদের সরাতে হবে। এটাই হচ্ছে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আপনারা শুনেছেন ভারত চাঁদে তাদের চন্দ্রযান পাঠিয়েছে। এর আগে আমেরিকা, রাশিয়া এবং চীন পাঠিয়েছিল, ভারত চতুর্থ। এগুলো নিয়ে গবেষণার জন্য ওদের সংগঠন আছে। বাংলাদেশেও কিন্তু ওদের মতো সংগঠন আছে। তার নাম হচ্ছে স্পারসো। এই সংগঠনের কাজ হচ্ছে তারা মহাকাশের ওপর গবেষণা করা। মহাকাশযান পাঠাবে, চন্দ্রে অবতরণ করবে, মহাকাশ বিষয়ে যা যা আছে সেগুলো তারা করবে। এতগুলো বছরে স্পারসো দুটো কাজ করেছে। তার একটি হলো তারা রাসেল স্মৃতি স্মরণ করে একটি মিলাদ করেছে এবং আরেকটা শোক দিবসের অনুষ্ঠান করেছে। এই দুটি অনুষ্ঠান করতে তাদের খরচ হয়েছে ২০০০ কোটি টাকা। এরা চোরা, সরকার চোর।
সরকারের বিরুদ্ধে সেপ্টেম্বর মাস থেকে আখেরি লড়াই শুরু হবে জানিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এই সরকারকে নাকে খত দিয়ে পদ থেকে সরতে বাধ্য করিয়ে আমরা ঘরে ফিরব। বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে এরা ভোট চুরি করেছে, ভোট ডাকাতি করেছে, টাকা লুট করেছে এবং পাচার করেছে, তাদের আমরা আত্মসমর্পণে বাধ্য করব। এ সরকার দখলদার সরকার, তারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে। তারা একটা জমিদারি কায়েম করতে চায়। একটি বিশেষ দল, তারা বাংলাদেশকে তাদের জমিদারি মনে করে। এই দখলদারদের বিরুদ্ধে মানুষ জেগে উঠেছে।
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার বুঝে গেছে তাদের আয়ু ফুরিয়ে এসেছে। এই সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রমাণ চান, এই সরকার পোড়ামাটির নীতি গ্রহণ করেছে। যুদ্ধে যখন কোনো বাহিনী জানে যে তারা হেরে যাচ্ছে, তখন তারা সব কিছু ধ্বংস করে দিয়ে যায়। বর্তমানে তারা সব কিছু ধ্বংস করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর পর সালমান এফ রহমান সব কিছু সামলান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের আরেক ভাই-ব্রাদার হচ্ছে সালমান এফ রহমান। প্রধানমন্ত্রীর পরে উনি সব কিছু সামলান। উনাকে ২২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বিশেষ বিবেচনায়। এভাবেই লুটপাট চলতে থাকবে। ওরা জানে তাদের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। এজন্য সব ব্যাংক ফোকলা করে দিয়ে যাচ্ছে।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ব্রিকস সম্মেলনে ইথিওপিয়া মতো দেশ সদস্য হতে পেরেছে। আর আপনি (সরকার প্রধান) যখন সদস্য হওয়ার জন্য নাম প্রস্তাব দিয়েছেন তখন ভারত আপনার বিরোধিতা করেছে। আমেরিকার স্যাংশন আছে বলে ভারত বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়নি।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সরকার ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুকে হস্তগত করেছে। তারা পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ে, বিচার বিভাগের শীর্ষ পর্যায়ের, আমলাদের শীর্ষ পর্যায়ের লোক এবং ব্যবসায়ী মাফিয়াদের সিন্ডিকেটকে একসঙ্গে করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। তারা সংসদকে দখল করেছে এবং এখানে বসে সবচেয়ে অন্যায্য আইনগুলোকে তারা আইন হিসেবে তৈরি করেছে।
সমাবেশ শেষে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরা একটি গণমিছিল নিয়ে শাহবাগ থেকে এলিফ্যান্ট রোড হয়ে নিউমার্কেটের দিকে যায়।
এমআই