আজীবন বহিষ্কার সিলেট বিএনপির ৪৩ নেতাকর্মী
Share on:
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ায় বিএনপির ৪৩ নেতাকর্মীকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে- যুবদল থেকে নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ নিতে চাওয়া একজন রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে কাউন্সিলর পদের ৩৮ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের চারজন রয়েছেন।
মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, সিলেটে সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৪৩ জনকে বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত শনিবার (৩ জুন) বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী পৃথকভাবে শোকজ নোটিশ ইস্যু করেন।
শোকজ নোটিশে বলা হয়, ‘১৫ বছর ধরে অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে খালেদা জিয়া প্রায় পাঁচ বছর ধরে কারাভোগ করছেন।
বিএনপি এই অবৈধ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ দলের সদস্য হয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে দলীয় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন। সুতরাং কেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার কারণ দেখিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দলের কেন্দ্রীয় দপ্তারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।’
বহিষ্কৃত বিএনপি নেতারা হলেন- মেয়র প্রার্থী সালাউদ্দিন রিমন, সাধারণ ১ নম্বর ওয়ার্ডে সৈয়দ তৌফিকুল হাদী ও মুফতি কমর উদ্দিন কামু। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মিজানুর রহমান মিঠু। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মো. কামাল মিয়া। খালেদ আকবর চৌধুরী, আমিনুর রহমান খোকন ও শাহেদ সিরাজ। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ফরহাদ চৌধুরী শামীম। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে মো. সাঈদুর রহমান জুবের। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে আব্দুর রহিম মতছির। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে নজরুল ইসলাম মুনিম। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে মো. মুজিবুর রহমান। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে এ.বি.এম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল ও সালমান চৌধুরী শাম্মী। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বদরুল আজাদ রানা। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে মামুনুর রহমান মামুন। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে হুমায়ূন কবির সুহিন। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে অ্যাডভোকেট রুকশানা বেগম শাহনাজ। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে সেলিম আহমদ রনি। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে আলী আব্বাস। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে গোলাম মোস্তফা কামাল ও সাহেদ খান স্বপন।
এছাড়া, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে জাবেদ আমিন সেলিম, রাজু মিয়া ও সানর মিয়া। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে মো. আব্দুল মুকিত। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে অ্যাডভোকেট হেদায়াত হোসেন তানভির ও দুলাল আহমদ। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে গউছ উদ্দিন পাখী ও দেলওয়ার হোসেন নাদিম। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে দিলওয়ার হোসেন জয়। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে উসমান হারুন পনির। ৩৯ ওয়ার্ডে জেলা ছাত্রদল সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন। ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে আব্দুল হাছিব এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে সুমন আহমদ সিকদাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করায় দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন- ২২, ২৩, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সালেহা কবির শেপী। ১০, ১১, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে রুহেনা বেগম মুক্তা ও অ্যাডভোকেট জহুরা জেসমিন এবং ১৬, ১৭, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে কামরুন নাহার পিন্নি রয়েছেন।
দলের সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় নেতাকর্মীদের প্রথমে দল শোকজ করেছিল জানিয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, শোকজের জবাব না পাওয়ায় দল ৪৩ জনকে বহিষ্কার করেছে।
২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত চারবার নির্বাচন হয়েছে।
২০০৩ সালে প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, ২০০৮ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনেও তিনি মেয়র নির্বাচিত হন কারাগার থেকে।
২০১৩ সাল থেকে মেয়র পদে আছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। তবে এবার দলের সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচনে প্রার্থী হননি তিনি।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এন