বই মেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন
Share on:
ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে আয়োজিত বই মেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দের আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে এ আবেদন করা হয়েছে।
রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে আয়োজিত বই মেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে যে বইগুলোর বিষয়ে বাংলা একাডেমি আপত্তি জানিয়েছে ওই বইগুলো স্টলে রাখা যাবে না বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বাংলা একাডেমির আপত্তি জানানো তিনটি বই হচ্ছে, ফাহাম আব্দুস সালামের লেখা ‘বাঙালির মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে’, লেখক জিয়া হাসানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ ও লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা’।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
শুনানিতে হাইকোর্ট প্রশ্ন রেখে বলেন, যে তিনটি বাংলা একাডেমি আপত্তি জানিয়েছে, ওইগুলো বাদ রেখে আদর্শ প্রকাশনীকে বই মেলায় স্টল বরাদ্ধ দিলে সমস্যা কোথায়? আমরা মনে করি সমস্যা থাকার কথা না। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালতে রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক আদর্শ প্রকাশনীকে বইমেলায় স্টল বরাদ্ধ দেওয়ার আর্জি জানান।
তিনি বলেন, যে বইয়ের বাংলা একাডেমি আপত্তি জানিয়েছে স্টলে সে বই রাখা হবে না।
এ সময় সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্ধ দেওয়ার আপত্তি জানান।
তখন আদালত বলেন, যে তিনটি বাংলা একাডেমি আপত্তি জানিয়েছে, ওই গুলো বাদ রেখে আদর্শ প্রকাশনীকে বই মেলায় স্টল বরাদ্ধ দিলে সমস্যা কোথায়? আমরা মনে করি সমস্যা থাকার কথা না।
গত ২ ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে আয়োজিত বই মেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে বই মেলায় আদর্শ প্রকাশনীর জন্য স্টল বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে। আদর্শ প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী মো. মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে রিটটি দায়ের করেন।
রিট আবেদনে আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ না দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রকাশনা সংস্থাটিকে স্টল বরাদ্দ দিতে নির্দেশণা চাওয়া হয়েছে। রিটে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও সভাপতিসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র একটি বইয়ের জন্য কাগজে-কলমে মেলাতে পুরো প্রকাশনীর অংশগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অথচ সে বইটি ব্যান্ড বা ব্ল্যাক লিস্টের নয়। তাদের এমন সিদ্ধান্ত বাংলা একাডেমি আইন ২০১৩ অনুযায়ী কোনো বৈধতা নেই। একইসঙ্গে প্রতিবছর একাডেমি থেকে যে নীতিমালা করা হয়, তারও ব্যত্যয় ঘটিয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলা একাডেমি। তাদের এমন সিদ্ধান্ত সংবিধানের বাক স্বাধীনতার বিরোধী।
এমআই