পাচার ঠেকাতেই তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে : তথ্যমন্ত্রী
Share on:
ভারতে পাচার ঠেকাতে দেশে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। শুক্রবার (১২ আগস্ট) রাজশাহীর মোহনপুরে শোক সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে দুপুরের দিকে মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই শোকসভার আয়োজন ছিল। তাতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে তেলের দাম কম ছিল। পশ্চিমবঙ্গ থেকে যত ট্রাক আসতো তারা তেল ভর্তি করে নিয়ে যেত। আমাদের দেশ থেকে তেল পাচার হয়ে যাচ্ছিল। আমরা মূল্য সমন্বয় করে পশ্চিম বাংলার সমান করেছি মাত্র। তবে এই অবস্থা দীর্ঘদিন থাকবে না।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পুরো পৃথিবীতে সংকট চলছে। সারা বিশ্বে তেলের দাম ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৬৫-৭০ ডলারের তেলের দাম ১৭০ ডলার হয়েছে। ৪ ডলারের এলএনজি গ্যাস এখন কিনতে হচ্ছে ৪২ ডলারে। দাম দশ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে আরও ছয় মাস আগে। দাম বাড়িয়ে আমরা তাদের সমান করেছি। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমলে আমাদের দেশেও তেলের দাম কমানো হবে। এটা নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নেই বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
দেশের চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতি সাময়িক উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন। তবে বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে লোডশেডিং হচ্ছে। তবে নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ লোডশেডিং সমস্যা সমাধান হবে।
লোডশেডিং নিয়ে বিএনপির রাজনীতির সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এখন ধানের শীষ বাদ দিয়ে হ্যারিকেন ধরেছে। প্রথমে মুসলিম লীগের মার্কা ছিল বাইসাইকেল। মার্কা পরিতবর্তন করে হ্যারিকেন করা হয়েছিল। তখন হ্যারিকেন দিয়েও মুসলিম লীগকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এখন বিএমপিও ধানের শীষ বাদ দিয়ে হ্যারিকেন ধরেছে। হয়তো হ্যারিকেন দিয়েও আর কদিন পরে বিএনপিকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না। মুসলিম লীগের মতো তারাও হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।
বঙ্গবন্ধুর রক্ত পরাভব মানে না উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু আপসের রাজনীতি করেন নাই। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার চাই। তার কন্যাও আপসের রাজনীতি করেন না। দেশ যেভাবে এগিয়ে গেছে, আজ তা প্রমাণিত।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এখন প্রতিটি ইউনিয়নে ১ থেকে ২ হাজারের বেশি নারীকে নানা ধরনের ভাতা দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা ভাতা দিচ্ছেন। নারীরা মাতৃত্বকালীন ভাতা পাচ্ছেন, এটা কিন্তু মা-বোনেরা দাবি করে নাই, এ ধরনের ভাতা ইউরোপে দেওয়া হয়, আমাদের নেত্রী সেই ভাতা দেশে প্রচলন করেছেন। ইউরোপে স্বামী পরিত্যাক্তা নারীর ভাতা নাই, আমাদের নেত্রী তাদের জন্যও ভাতা চালু করেছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াও প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, কিন্তু ভাতা দেন নাই।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়ন করেছেন। সবক্ষেত্রে নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছে। এখন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য হচ্ছেন নারীরা। আমাদের বিরোধী দলীয় নেত্রী, স্পীকার, প্রধানমন্ত্রী নারী। ১০ বছর আগে কেউ ভাবেনি যে, একজন মহিলা এসপি, ডিসি ও বিচারপতি হবে। শেখ হাসিনা মা-বোনদের হাতে ক্ষমতা দিয়েছেন।
সমগ্র দেশ বদলে গেছে উল্লেখ করে ড. হাসান মাহমুদ বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্য বদলে গেছে। এখন খালি গায়ে-ছেঁড়া জামা পরা মানুষ দেখা যায় না। খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। আকাশ থেকেও কুড়েঘর দেখা যায় না। এগুলো কোনো যাদুর কারণে হয়নি। এটি হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার যাদুকরি নেতৃত্বের কারণে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে শোকসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা ও নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার প্রমুখ।
এমআই