রাজধানীতে জামায়াতের ‘হজ গাইড লাইন’ শীর্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত
Share on:
ঢাকায় আল্লাহর মেহমান হজযাত্রীদের সম্মানে ‘হজ গাইড লাইন’ শীর্ষক একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সমাবেশটির আয়োজন করে।
সমাবেশে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল। এ সময় সভাপতির বক্তব্য দানকালে তিনি বলেন, হজ একটি মৌলিক ইবাদত। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অতিব গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হজ পালন করা। মহান আল্লাহ যাদেরকে আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান ও শারীরিকভাবে সুস্থ রেখেছেন তাদের জন্য হজ অবশ্যই পালনীয় ও বাধ্যতামূলক ফরজ ইবাদত। হজ্ব একটি বড় ফরজ ইবাদত, এখানে অনেক কর্মসূচি রয়েছে, যা একজন হাজীকে পর্যায়ক্রমে সম্পাদন করতে হয়। বাংলাদেশ থেকে যারা হজে যান, তাদের বেশিরভাগ সঠিক নিয়ম-কানুন না জানার জন্য হজব্রত পালনের সময় বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন। বিভিন্ন কাফেলা বা সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো সম্মানিত হাজীদের হজের মৌলিক বিষয়গুলো প্রশিক্ষণ দিয়ে এই ফরজ ইবাদত পালনে সহযোগিতা করে থাকেন। আমরা সে সকল প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, হজ পালনের প্রকৃত বিধান যা কুরআন ও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত তা শিক্ষা প্রদান করে হাজীদের হজ পালনে সহযোগিতা করবেন। একজন মুসলিম হিসেবে আমরা চাই, হজের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ ইবাদত যেন আল্লাহ আমাদের সবার থেকে কবুল করেন।
নূরুল ইসলাম বুলবুল আরও বলেন, কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে হজ পালন করা খুব জরুরি। প্রিয় রাসূল সা: হজ পালনে যেসব নির্দেশনা দিয়ে গেছেন সেভাবেই সবার হজ পালন হওয়া দরকার। সফল হজ বা হজ্বে মাবরুর আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার জন্য যথাযথ নিয়মগুলো হাজীদেরকে অনুসরণ করতে হবে, যাতে করে হজ পালন শেষে আমরা নিজেকে পুতপবিত্র করতে পারি। আমাদের হজ পালন করা যেন শুধুমাত্র কোনো আনুষ্ঠানিকতা না হয়। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার নৈকট্য লাভের মাধ্যম, যা আল্লাহর আদেশ। সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের নির্ধারিত স্থানে গিয়ে হজ পালনের মাধ্যমে মূলত আল্লাহর কাছে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেটা সব হাজীদেরকে মনে রাখতে হবে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বিশিষ্ট আলেম মাওলানা ড. খলিলুর রহমান মাদানি। তিনি বলেন, হজের ফরজ ৩টি- ইহরাম বাঁধা, উ’কুফে আ’রাফা (আরাফাতের ময়দানে অবস্থান), তাওয়াফুয্ যিয়ারাত। ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহের পঞ্চমটি হলো- হজ্বে বায়তুল্লাহ। ঈমান, নামাজ, যাকাত ও রোজার পরই হজের অবস্থান। হজ মূলত শারীরিক ও আর্থিক উভয়ের সমন্বিত একটি ইবাদত। তাই উভয় দিক থেকে সামর্থ্যবান মুসলিমের ওপর হজ পালন করা ফরজ।
কেন্দ্রীয় মজলিসের শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির বলেন, যারা হজের সফরের সৌভাগ্য লাভ করেন তারা প্রকৃত আল্লাহর মেহমান। তাই প্রত্যেকের উচিত সর্বদা আল্লাহর আনুগত্য ও তার ইশক-মুহববতের অনুভূতি নিয়ে সেখানে অবস্থান করা। বায়তুল্লাহ ও আল্লাহর অন্যান্য নিদর্শনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। হজ অবস্থায় পরিবার ও নিজ দেশের কল্যাণে বিশেষ দোয়া করা।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, যাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হজ পালনে কবুল করেছেন তারা অবশ্যই সম্মানিত। তাদেরকে এটাও মনে রাখতে হবে এই হজ পালনের বাইরেও সামগ্রিক জীবনে আমাদের আরো কিছু মৌলিক ইবাদত ও দায়িত্ব মহান আল্লাহ প্রদান করেছেন। সেসব ইবাদতেও যেন আমরা ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ বলার যোগ্যতা অর্জন করি। খেয়াল রাখতে হবে, হজ পালনের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে যেন সকল পর্যায়ে এটা আমাদের দাওয়াতী কাজেরও অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা: দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য হাফিজুর রহমানসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে আল্লাহর মেহমান সম্মানিত হাজীদেরকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পক্ষ থেকে বিশেষ সৌজন্য উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।
এমআই