tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
প্রকাশনার সময়: ১১ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:০৪ এএম

ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নড়াইলে দুই মুক্তিযোদ্ধা লাঞ্ছিত


মুক্তিযোদ্ধা.jpg

নড়াইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার খাবার প্যাকেট আনতে গেলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিসি অফিসের সহকারী নাজির বাবর আলীর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ডিসি অফিসের কয়েকজন কর্মচারী এসএ মতিনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে চেয়ার উঁচু করে মারতে যান।


নড়াইল মুক্ত দিবসে জেলা প্রশাসনের কয়েক কর্মচারী দুজন মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করে। এ দৃশ্য ধারণ করার সময় এক সাংবাদিকের মোবাইল ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরের জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে নড়াইল জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সামনে এসব ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা পরিষদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু জানান, শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ফকরুল হাসানের সভাপতিত্বে ১০ ডিসেম্বর মুক্ত দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে খাবার প্যাকেট বিতরণ চলছিল।

এ সময় আমরা ৩-৪ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার অ্যাডভোকেট এসএ মতিন নাস্তার প্যাকেট আনতে যান।

তখন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিসি অফিসের সহকারী নাজির বাবর আলীর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। তর্ক-বিতর্ককালে বাবরসহ ডিসি অফিসের কয়েকজন কর্মচারী এসএ মতিনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন।

তখন আমি এগিয়ে যাই। এরপর বাবর আলীসহ তার অনুসারীরা পুনরায় আমাদের ওপর চড়াও হয় এবং কয়েকবার তেড়ে আসে।

এ সময় উত্তেজিতভাবে আমাদের নিয়ে অশালীন আচরণ করতে থাকে। ঘটনাস্থলে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকসহ (সার্বিক) বেশ কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন।’

সাংবাদিক আবদুস সাত্তার বলেন, ‘সহকারী নাজির বাবর আলীসহ বেশ কয়েকজন কর্মচারী বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এসএ মতিন ও সাইফুর রহমান হিলুর ওপর তেড়ে যাচ্ছিলেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ ফকরুল হাসান ঠেকানোর চেষ্টা করেও নাজির বাবর আলী তা তোয়াক্কা না করে মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে একাধিকবার হাত উঁচিয়ে এগিয়ে নিয়ে যান এবং কেউ কেউ চেয়ার উঁচু করে মারতে যান।

তখন পেশাগত কারণে আমি ভিডিও ধারণ করতে যাই। এসময় ডিসি অফিসের কয়েক কর্মচারী আমাকে জাপটে ধরে জোরপূর্বক হাত থেকে মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয়।

এর দুই ঘণ্টা পর ক্যামেরা মোবাইল ফেরত দিলেও ওই ঘটনাস্থলের ভিডিও এবং আমার গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য প্রোগ্রামের সব ভিডিও ডিলিট করে দেয়।

পরে দুপুর ২টার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ মোবাইল ফোন ফিরিয়ে দেয়।

মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু এ প্রতিনিধিকে জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি এবং মুজিব জন্মশতবর্ষের সময়ে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।

এ ঘটনায় দোষী কর্মচারিদের যদি উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া না হয়, তাহলে সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার অ্যাডভোকেট এসএ মতিন এ প্রতিনিধিকে বলেন, ডিসি অফিসের কর্মচারি বাবর আলী চেয়ার দিয়ে আমাকে মারতে উদ্যত হয়।

আমরা এভাবে অপমানিত হবার জন্য কি দেশ স্বাধীন করেছিলাম? নড়াইল মুক্ত দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের লাঞ্ছিত করার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।

আমি এ ঘটনার জন্য দায়ী জেলা প্রশাসনের কর্মচারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

নড়াইল জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি বাইরে ছিলাম। নড়াইলে এসেছি। আলোচনার মাধ্যমে সন্তোষজনক সমাধানের জন্য বিষয়টি নিয়ে বসবো।’

এইচএন