গাজায় ত্রাণকর্মী হত্যা : দুই সেনা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ইসরায়েলের
Share on:
গাজায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ বহরে হামলা ও ৭ ত্রাণকর্মী নিহতের ঘটনায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত এবং তিন জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আইডিএফ।
বরখাস্ত হওয়া দুই কর্মকর্তার মধ্যে একজন ব্রিগেডিয়ার এবং অপরজন মেজর পদমর্যাদার বলে জানা গেছে। তবে তাদের দু’জনের নাম প্রকাশ করেনি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
পরে তেল আবিবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইডিএফের মুখপাত্র অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ‘এটি খুবই গুরুতর একটি ঘটনা এবং এজন্য আমরা দায়ী। এটি ঘটা একেবারেই উচিত হয়নি এবং আমরা কথা দিচ্ছি, ভবিষ্যতে আর এমন ঘটবে না।’
গত ২ এপ্রিল গাজায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক খাদ্য সহায়তা সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের (ডব্লিউসিকে) ত্রাণবাহী গাড়িতে বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনারা। এতে নিহত হন ডব্লিউসিকের ৭ স্বেচ্ছাসেবী ত্রাণকর্মী। এই ত্রাণকর্মীদের মধ্যে একজন অস্ট্রেলিয়া, তিন জন ব্রিটেন, একজন যুক্তরাষ্ট্র, একজন পোল্যান্ড এবং এবং একজন ফিলিস্তিনের নাগরিক।
দাতব্য সংস্থাটির পক্ষ থেকে হামলার প্রসঙ্গে বলা হয়েছিল, গাজার দেইর এল-বালাহতে ত্রাণ বিতরণের পর, ডব্লিউসিকের লোগোযুক্ত একটি ত্রাণবাহী গাড়িতে করে যাচ্ছিলো দলটি। বিচ্ছিন্ন একটি সড়ক ধরে যাওয়ার সময় তাদের বাহিনীর ওপর হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। সড়কটি ত্রাণ কর্মীরাই ব্যবহার করে।
হামলার পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘যুদ্ধে এটি হয়।’
তবে শুক্রবারের বিবৃতিতে নিজেদের দায় স্বীকার করে আইডিএফ বলেছে, ‘দেইর আল বালাহর একটি গুদামে ত্রাণ খালাসের পর গাড়িটি যখন ফিরে যাচ্ছিল, আমাদের একজন কমান্ডার ভুলবশত ধারণা করেছিলেন যে গাড়িটিতে হামাসের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রয়েছে। এ কারণেই হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’
‘গাড়ি শনাক্তকরণে ভুল, ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবং কমান্ডারের অদক্ষতা এই গুরুতর ভুলের জন্য দায়ী।’
পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ হারজি হালেভি এই ভুলের জন্য ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডকে দায়ী করেছেন।
হামলার পর গাজায় নিজেদের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করেছিল ডব্লিউসিকে। শুক্রবার আইডিএফের বিবৃতি প্রকাশের পর পাল্টা এক বিবৃতিতে গাজায় ত্রাণকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
ডব্লিউসিকের শীর্ষ নির্বাহী এরিন গোর বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইসরায়েলকে অবশ্যই গাজায় ত্রাণ সরবরাহকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। যতদিন দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হচ্ছে— গাজায় আমাদের অপারেশন বন্ধ থাকবে।’
সূত্র : আলজাজিরা
এনএইচ