tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ১৬ জুলাই ২০২৩, ২০:৫০ পিএম

পদত্যাগ করছেন বৃটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস


1

যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় পরবর্তী রদবদলের সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে জানান তিনি। পাশাপাশি পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।


রোববার (১৬ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। বেন ওয়ালেস বিগত চার বছর ধরে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।

বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চারবছর দায়িত্বপালনের পর মন্ত্রিসভার পরবর্তী রদবদলের সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বেন ওয়ালেস।

সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসকে তিনি বলেছেন, তিনি পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনেও দাঁড়াবেন না। তবে ‘অসময়ে’ মন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়া এবং উপ-নির্বাচনের কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, বেন ওয়ালেস যুক্তরাজ্যের তিনজন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাজ্য যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তাতে বড় ভূমিকা পালন করেছেন তিনি।

আগামী সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় পরবর্তী রদবদল হতে পারে বলে বেশ কয়েকটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে। সেই রদবদলের সময় প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তার মন্ত্রিসভার শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন মন্ত্রীকে রদবদলের পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গেছে, তবে সেটির নির্দিষ্ট কোনও তারিখ এখনও নিশ্চিত করা হয়নি।

বেন ওয়ালেস বলেছেন, রাজনীতির কারণে তার পরিবারের ওপর পড়া প্রভাবের কারণেই তিনি ফ্রন্টলাইন রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন। এছাড়া তার মিত্ররাও বলেছেন, ওয়ালেসের এই সিদ্ধান্তটি ঋষি সুনাকের নেতৃত্বের প্রতি কোনো ধরনের ভাবনা থেকে নেওয়া নয়।

বিবিসি জানিয়েছে, আসন্ন সীমানা পরিবর্তনের কারণে বেন ওয়ালেসের ওয়ায়ার এবং প্রেস্টন নর্থ আসনটি আগামী নির্বাচনে অদৃশ্য হয়ে যাবে এবং তিনি সংবাদপত্রকে বলেছেন, তিনি নতুন কোনো আসন থেকে নির্বাচন করবেন না।

সংবাদাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, ৫৩ বছর বয়সী ব্রিটিশ এই মন্ত্রীর ঋষি সুনাকের সরকার ছাড়ার বিষয়ে বিবেচনা করার বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরে জল্পনা চলছে এবং সানডে টাইমসকে দেওয়া তার এই ঘোষণা ওয়ালেসকে নিয়ে সেই গুঞ্জনকেই নিশ্চিত করল।

ওয়ালেস এর আগে গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রী সুনাককে মন্ত্রিসভা থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন।

সানডে টাইমসকে বেন ওয়ালেস বলেছেন: ‘আমি ১৯৯৯ সালে স্কটিশ পার্লামেন্টে আসার মাধ্যমে রাজনীতিতে এসেছিলাম। এরপর ২৪ বছর পার হয়ে গেছে। আমি আমার বিছানায় তিনটি ফোন নিয়ে সাত বছরের বেশি সময় কাটিয়েছি।’

সংবাদ মাধ্যমটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওয়ালেস ইঙ্গিত দেন, উচ্চ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের জন্য তার আহ্বান জানাতে থাকবেন তিনি। মূলত প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালনের পুরো সময়জুড়ে তিনি এই বিষয়ে সরব থেকেছেন।

যদিও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে বেন ওয়ালেস মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব হতে চান বলে জানা গেছে। তবে ওয়ালেস বলছেন, তিনি আর ন্যাটোর পরবর্তী মহাসচিব হওয়ার দৌড়ে নেই। মূলত জেনস স্টলটেনবার্গের দায়িত্বপালন অব্যাহত রাখার ঘোষণা কার্যকরভাবে সামরিক এই ব্লকের পরবর্তী প্রধান হওয়ার বিষয়ে ওয়ালেসের আশাকে শেষ করে দিয়েছে।

এছাড়া ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে অস্ত্র ও যানবাহন হস্তান্তরের তত্ত্বাবধানসহ রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিকে সহায়তার ক্ষেত্রে ওয়ালেস সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছেন।

রাশিয়া যখন ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু করেছিল তখন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে বেন ওয়ালেসের অবস্থান দেশে এবং বিদেশে ব্যাপকভাবে সবার নজরে আসে।

তিনি কনজারভেটিভ পার্টির একজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব এবং মাঝে মাঝে তাকে পার্টির নেতা হওয়ার জন্য অগ্রগামী ব্যক্তিত্ব হিসেবেও দেখা হতো। যদিও নেতৃত্বের নির্বাচনে তিনি কখনও দাঁড়াননি।

বেন ওয়ালেস তার আগের যে কোনো কনজারভেটিভ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর চেয়ে বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে সানডে টাইমসকে তিনি বলেন, এই দায়িত্ব তার পরিবারের ওপর ঠিক কী প্রভাব ফেলেছে সে সম্পর্কে তিনি সচেতন ছিলেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া এবং আফগানিস্তানে তালেবান গোষ্ঠীর ক্ষমতা দখলের পর নানা উদ্যোগে বেন ওয়ালেসের ভূমিকা বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে।

২০০৫ সালে সাবেক আর্মি ক্যাপ্টেন বেন ওয়ালেস ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হন। এর আগে অবশ্য ১৯৯৯ সালে স্কটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে নাম লেখান তিনি।

২০১৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সরকারের জুনিয়র মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পদে দায়িত্ব পান ৫৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিক।

এন