tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ২৪ জুন ২০২২, ১২:৫১ পিএম

আইপিইএফ ভাবনায় বাংলাদেশ


IPF-2022

‘ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক’ (আইপিইএফ) জোটে যোগ দেওয়ার কথা ভাবছে বাংলাদেশ সরকার। যদিও কবে নাগাদ যোগ দেবে তা নিশ্চিত নয়।


ঢাকা এ ব্যাপারে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত নানা দিক পর্যালোচনা করছে। তাছাড়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে এই জোটে যোগ দিতে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও দেওয়া হয়নি। তবে জোটে নেওয়ার আগ্রহ আছে তাদের।

বাংলাদেশ আইপিইফের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হওয়ার সুযোগ নেয়নি। আমেরিকা প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশকে এই বলয়ে অন্তর্ভুক্ত করার ইঙ্গিত দিয়েছিল। কিন্তু ঢাকার অনেকটা ভাবলেশহীন প্রতিক্রিয়ার কারণে শেষ অব্দি বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে ১৩ জাতির জোটের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

সংবাদ মাধ্যমকে ঢাকার উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আইপিইএফের ৪ টি নীতিগত স্তম্ভের দুটির সঙ্গে কাজ করার কথা চিন্তা করছে বাংলাদেশ। এ ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব করা ঠিক হবে না। আমরা অনেক ক্ষেত্রে সময়মতো সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে অনুধাবন করি যে, বিষয়টা ঠিক হয়নি’।

এ কর্মকর্তা আরও জানান, সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশন’ (জেসিসি) বৈঠক করতে ভারত সফরে গেলে নয়াদিল্লির তরফ থেকেও বাংলাদেশকে আইপিইএফে যোগদান করার জন্যে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, অনেকে মনে করে, বাংলাদেশ চীনের দিকে বেশি ঝুঁকে আছে।

আইপিইএফের ভিত্তি হলো ৪ টি নীতিস্তম্ভ। এগুলো হলো-

১. অবাধ ও স্থিতিস্থাপক বাণিজ্য,

২. স্থিতিশীল সরবরাহ চেইন,

৩. অবকাঠামো, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি এবং ডিকার্বোনাইজেশন,

৪. কর এবং দুর্নীতি দমন।

বাংলাদেশের তরফে দুটি নীতিস্তম্ভের বিষয়ে বিশদভাবে জানতে চাওয়া হয়েছে। এই দুটি নীতিস্তম্ভ হলো, এক. স্থিতিশীল সরবরাহ চেইন, দুই. অবকাঠামো, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও ডিকার্বোনাইজেশন।

ঢাকার আরেক কর্মকর্তা বলেছেন, আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব না দিলেও বাংলাদেশকে আইপিইএফে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ আছে।

বাংলাদেশ আইপিইএফে যোগদানের বিষয়ে চীনের আপত্তি থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে চীন অনানুষ্ঠানিকভাবে জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ আইপিএফে যোগ দেবে কিনা। ঢাকার তরফে জানানো হয়েছে যে, বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যালোচনা চলছে।

বাইডেন ক্ষমতায় যাওয়ার পর এশিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি’ (আইপিএস) গঠন করেন। তার আওতায় প্রথমে গঠন করা হয় ৪ দেশের সামরিক জোট কোয়াড। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান কোয়াডের সদস্য।

অনেকে মনে করেন, এশিয়ায় চীনের প্রভাব মোকাবিলায় এই জোট গঠন করা হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশসহ অনেক দেশ কোয়াডে যোগ দিতে আগ্রহ দেখায়নি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক সহযোগিতার জোট আইপিইএফ গঠনের প্রাক্কালে বাংলাদেশকে বিষয়টি নিয়ে ব্রিফ করেছিল। কারণ যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশকে এই জোটে দেখতে চায় তার প্রাথমিক তালিকায় বাংলাদেশও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ঢাকার তরফে তখন বলা হয় যে, বাজার সুবিধা দেওয়া হলে বাংলাদেশ এই জোটে যোগ দিতে আগ্রহী। কিন্তু এই জোটে বাজার সুবিধার কোনো সুযোগ না রাখায় ঢাকার আগ্রহে ভাটা পড়ে।

বাংলাদেশকে আইপিইএফ গঠনের চূড়ান্ত পর্যায়ে ডাকেনি যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার আগে ৬ মে দেশগুলোর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের একটি ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বাংলাদেশকে ডাকা হয়নি। বাংলাদেশের পরিবর্তে ব্রুনাইকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ২৩ মে টোকিওতে কোয়াড সম্মেলনের সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাকে পাশে রেখে বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে ১৩ জাতির আইপিইএফ ঘোষণা করেন। জোটের অন্য নেতারাও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন।

প্রসঙ্গত, আইপিইএফে যে ১৩ দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম।

এইচএন