tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৩১ এএম

আজ ঢাকা আসছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো


2
আজ ঢাকা আসছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো

দ্বিপক্ষীয় সফরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন ঢাকা আসছেন আজ। নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলন শেষে বাংলাদেশ সফর করবেন তিনি। গত সপ্তাহে ঢাকাস্থ ফ্রান্স দূতাবাসের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে তার সফর সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়েছে। যাতে সফরের সম্ভাব্য আলোচ্যসূচি শেয়ার করা হয়েছে।


তাছাড়া সেগুনবাগিচার তরফেও ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, হাই প্রোফাইল ওই সফর বাস্তবায়নে সরকারের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। ফ্রান্স প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দিল্লি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরছেন।

আজ দিনের শুরুতে তিনি ঢাকা পৌঁছাবেন এবং বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে ফ্রান্স প্রেসিডেন্টকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাবেন। জানা গেছে, ইতিমধ্যে বাংলাদেশে স্যাটেলাইট কারখানা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে ফ্রান্স। দেশটির রাষ্ট্রপ্রধানের ঢাকা সফরে এ সংক্রান্ত একাধিক চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।

বিজ্ঞাপনসফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কে কিছু সময় কাটাবেন তিনি। জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং জাদুঘর পরিদর্শন করবেন। ৩৩ বছর আগে ১৯৯০ সালে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের সফরের আলোচনার বিষয় জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত সপ্তাহে মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু, নারীর ক্ষমতায়ন, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোসহ আমাদের অনেক ইস্যু রয়েছে। সেই সঙ্গে অভিবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে।

২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্যারিস সফরকালে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সেই সফরে ব্যবসা, বিনিয়োগ ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে একমত হয়েছিল দুই দেশ।

প্যারিসের এলিসি প্রাসাদে দুই শীর্ষ নেতার বৈঠকের পর দুই দেশ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ক সম্মতিপত্রও সই হয়েছিল। সে সময়ে বাংলাদেশে স্যাটেলাইট কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব দেয় ফ্রান্স।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা মানবজমিনকে বলেন, করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্ব অর্থনৈতিকভাবে সংকটে। এ কারণে ফ্রান্সের সেই প্রস্তাবের কাক্সিক্ষত অগ্রগতি হয়নি। প্রেসিডেন্টের সফরে এ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হবে।

এ ছাড়া বাংলাদেশকে চারটি ছোট পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট কেনার প্রস্তাব দিয়েছে ফ্রান্স। স্যাটেলাইটগুলো তৈরি করবে এয়ারবাস প্রতিষ্ঠান। চুক্তি সইয়ের প্রথমদিন থেকে কন্সটেলেশন সেবা যুক্ত থাকবে, যাতে একে অপরের স্যাটেলাইট ব্যবহার করে তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করতে পারবে উভয় দেশ। চারটি স্যাটেলাইটের প্রথম দুটি স্যাটেলাইট তৈরি হবে ফ্রান্সে। যার রক্ষণাবেক্ষণে বাংলাদেশে কারখানা করবে এয়ারবাস। বাকি স্যাটেলাইট দু’টি বাংলাদেশে তৈরির চিন্তা রয়েছে ফ্রান্সের।

২০২১ সালে বাংলাদেশ ও ফ্রান্স প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ক যে সম্মতিপত্র সই করেছিল তাতে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আধুনিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্রযুক্তি বিনিময়ের মতো বিষয়গুলো ছিল। প্রেসিডেন্টের সফরে সেই সম্মতিপত্রের বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা  হতে পারে। ফ্রান্স থেকে বাংলাদেশের ১০টি এয়ারবাস ক্রয়ের প্রস্তাব রয়েছে। তা নিয়েও কথা হবে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা কিছু বিমান বিক্রি করতে চায়। আমরা রাজি হয়েছি। আমরা দশটি এয়ারবাস কিনবো। এর মধ্যে দুটো হচ্ছে কার্গো বিমান। আমরা দুটো চাচ্ছি, বোয়িং ও এয়ার। তবে ডলার সংকটের কারণে ক্রয় প্রক্রিয়া দেরি হতে পারে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রথম বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ফ্রান্সের সহায়তায় উৎক্ষেপণ করেছিল। আমরা আরও দুটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে চাই। ফ্রান্সের প্রযুক্তি ভালো। তারা স্যাটেলাইট কারখানা নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা এটা বিবেচনা করছি। চিন্তা-ভাবনা করছি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেইনি।

দূতাবাস যা বলেছে- এদিকে দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নয়াদিল্লিতে ৯ ও ১০ই সেপ্টেম্বর জি-২০ সম্মেলনের পর সরাসরি  ঢাকা আসবেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। বাংলাদেশ সফরে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বা ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে ফ্রান্সের কৌশলের বিষয়ে আলোচনা হবে। সেইসঙ্গে এমন একটি দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর হবে, যে দেশটি দ্রুত অর্থনৈতিক অগ্রগতি করেছে এবং অংশীদারিত্বে বৈচিত্র্য খুঁজছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জলবায়ু নিয়ে প্যারিস এজেন্ডাসহ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে অভিন্নতা রয়েছে। প্যারিস এজেন্ডা বাংলাদেশ সমর্থন করে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ যেহেতু ঝুঁকিতে আছে, তাই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে মানবিক দিক থেকে এ দেশের পাশে থাকার সংকল্প আবারো ব্যক্ত করবেন।

বিশ্বের শান্তিরক্ষা অথবা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া, আন্তর্জাতিক সংহতিমূলক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ  গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা একটি দেশ। 

এন