বঙ্গবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কোটি টাকা দিলো এফবিসিসিআই
Share on:
বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য এক কোটি টাকা দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
শনিবার (২৭ মে) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কাছে ‘বঙ্গবাজার অগ্নি ক্ষতি সহায়তা তহবিল’-এ এক কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির নেতাদের কাছে এ চেক হস্তান্তর করেন।
এসময় এফবিসিসিআই সভাপতি ও সার্ক চেম্বারের নতুন সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘যেকোনো ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাই ব্যবসায়ীরদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। বঙ্গবাজারে যখন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তখন আমি দেশের বাইরে ছিলাম। সেখানে আগুনের ভয়াবহতা এতটাই যে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, কিছুই অবশিষ্ট নেই। সেখানে যাওয়ার পর আমার মনে হয়েছে এই সংকটে আমাদের পক্ষ থেকে সামান্য হলেও সহযোগিতা করা উচিত। সেজন্য আমরা এই এক কোটি টাকা সহায়তা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আগের ঘোষণা অনুযায়ী আজ এই চেক হস্তান্তর করছি আমরা। সরকারের পাশাপাশি সামর্থ্যবান ব্যবসায়ীদের উচিত এ ধরনের দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়ানো।’
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ব্যবসায়ীদের অবশ্যই কমপ্লায়েন্স মেনে ব্যবসা করা উচিত। তবে অগ্নিকাণ্ডের পর সব দোষ শুধু ব্যবসায়ীদের না দিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক ভবন ও কলকারখানার লাইসেন্স দেয় তারাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। এধরনের দুর্ঘটনায় সেসব প্রতিষ্ঠানেরও দায় রয়েছে।
ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বঙ্গবাজারে আগের মতো অবকাঠামো নির্মাণ না করে স্থায়ী ও আধুনিক ভবন নির্মাণে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
পাশাপাশি রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলোর ব্যাপারে ব্যবসায়ী নেতা ও মার্কেট কমিটিগুলোকে সচেতন হওয়া ও প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
দেশের কল-কারখানাগুলোতে ফায়ার সেফটি নিশ্চিতে সরকারের সঙ্গে এফবিসিসিআই কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাইভেট সেক্টরে ফায়ার সেফটি নিয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা ফায়ার সেফটি কাউন্সিল গঠন করেছি। এই সেফটি কাউন্সিলের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার কোম্পানি পরিদর্শন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রতিটি কল-কারখানায় অগ্নি-নির্বাপণ নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই সেফটি কাউন্সিল সারা দেশে মোট ৪৪ হাজার কোম্পানি ভিজিট করবে।
এসময় দোকান ও শপিংমলে ফায়ার সেফটি নিশ্চিতে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি ও এফবিসিসিআই ফায়ার সেফটি কাউন্সিলকে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।
এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, বঙ্গবাজারের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিস একাধিকবার সতর্ক করলেও মার্কেট কমিটির পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এসময় শুধু সরকারকে দোষারোপ না করে ব্যবসায়ীদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, রাজধানীতে বিদ্যমান মার্কেটগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। কোনো ধরনের ঝুঁকি লক্ষ্য করা গেলে তাদের সতর্ক করার পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেগুলো সংশোধনের নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এসময় কলকারখানায় অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিতে এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের চলমান বিভিন্ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন কাউন্সিলের প্রধান ব্রিগেডিয়ার আবু নাঈম মো. শহীদুল্লাহ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, মো. হাবীব উল্লাহ ডন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, এফবিসিসিআইর পরিচালক, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এমআই