জয়ের সমান এক ড্র পাকিস্তানের
Share on:
করাচি টেস্টে দারুণ নাটকীয়তা দেখালো পাকিস্তান। প্রায় দুই দিন হাতে রেখে পাকিস্তানের সামনে পাঁচশ রানের লক্ষ্য ঝুলিয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। পরের গল্পটা কেবলই বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ানদের। বাকিদের যোগ্য সঙ্গ পেয়ে রীতিমতো এক বীরত্বগাঁথাই লিখে বসেছেন দুজন। তাতেই দুই দিন ঠেকিয়ে হার এড়ানোর অসাধ্যটা সাধন করে বসেছে স্বাগতিক পাকিস্তান। পেয়েছে জয়ের সমান এক ড্র।
প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান খেলতে পেরেছিল মোটে ৫৩ ওভার, অলআউট হয়েছিল মাত্র ১৪৮ রানে। সে কারণেই পাকিস্তানকে যেন একটু খাটো করেই দেখে ফেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তাদের ফলো অন না করানোর সিদ্ধান্তটা আসতে পারে নিজেদের বোলিং শক্তিকে একটু বড় করে দেখা থেকেও।
কিংবা বোলারদের একটু বিশ্রাম দেওয়ার রক্ষণাত্মক কৌশলও কাজ করে থাকতে পারে পেছনে। তবে যাই হোক এর পেছনের কারণ, পাকিস্তান সে সিদ্ধান্তটাকে শেষমেশ ভুলই প্রমাণ করে বসেছেন। ১৭১.৪ ওভার ব্যাট করে অজিদের ডুবিয়েছে ড্রয়ের হতাশায়।
শুরুটা মোটেও আশানুরূপ হয়নি দলটির। ২ রানে ইমাম উল হক আর ২১ রানে হারিয়ে বসেছিল আজহার আলীকে। তবে এরপরের গল্পটা কেবলই বাবর আজমদের।
এর আগে, প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ৫৫৬ রানে ডিক্লিয়ার দেয় অস্ট্রেলিয়া। জবাবে প্রথম ইনিংসে মোটেও সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তান। অল আউট হয় মাত্র ১৪৮ রানে। পাকিস্তানকে ফলোঅন না করিয়ে আবার ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ৯৭ রান তোলার পর ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া।
পাকিস্তানের সামনে জয়ের টার্গেট দাঁড়ায় ৫০৬ রান। এই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে চতুর্থ দিন শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১৯২ রান। শফিক ৭১ ও বাবর আজম ১০২ রানে ছিলেন অপরাজিত।
বুধবার ম্যাচের শেষ দিনে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল আট উইকেট। পাকিস্তানের দরকার ছিল ৩১৪ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৪৪৩ রান। ম্যাচ ড্র।
আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার শফিক ও বাবর নামেন এদিন ব্যাট করতে। দলীয় ২৪৯ রানে বিদায় নেন ওপেনার শফিক। মাত্র ৪ রানের জন্য তিনি পাননি শতকের দেখা। ৯৬ রান করে কামিন্সের বলে তিনি ক্যাচ দেন স্মিথের হাতে। ফুয়াদ আলম বেশি সঙ্গ দিতে পারেননি বাবর আজমকে। ২৭ বলে ৯ রান করে তিনি ফেরেন সাজঘরে কামিন্সের বলে ক্যারির হাতে ক্যাচ দিয়ে।
তবে রিজওয়ানের সাথে জমে বাবরের জুটি। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ৩৯২ রান অবধি। সারাদিন দারুণ খেলা বাবর আজম ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির পথে তখন। তখনই লায়নের বলে লাবুশানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পাক অধিনায়ক। ৪২৫ বলে তিনি খেলেন ১৯৬ রানের ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ২১টি চার ও একটি ছক্কার মার। টেস্টে বাবরের আগের সর্বোচ্চ রান ছিল ১৪৩।
বাবরের বিদায়ের পরের বলেই গোল্ডেন ডাক মারেন ফাহিম আশরাফ। দিনের বাকি সময়টাতে ম্যাচ বাঁচিয়েছেন বলতে গেলে কিপার ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। তিনি হাঁকান সেঞ্চুরি। ১৭৭ বলে তিনি অপরাজিত থাকেন ১০৪ রানে। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় শতক। সাজিদ খান করেন ৯ রান।
এদিকে, বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে নাথান লায়ন চারটি, কামিন্স দুটি ও ক্যামেরন গ্রিন একটি উইকেট নেন।
উল্লেখ্য, ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন অনুমিতভাবে ড্রয়ের নায়ক অধিনায়ক বাবর আজম। খেলেছেন ১৯৬ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে চতুর্থ ইনিংসে এটি বিশ্বরেকর্ড।
এমআই