tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
সারাদেশ প্রকাশনার সময়: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৫২ পিএম

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে উপকূলে ভারী বর্ষণ, স্থবির জনজীবন


941c3ebf880dcf4afef190811934b6cb-65573478c6de6

বঙ্গোপসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়ে অগ্রভাগ খেপুপাড়া হয়ে দক্ষিণ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরিশাল ও খুলনায় দমকা হাওয়াসহ ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। স্থবির হয় পড়েছে জনজীবন।


বরিশালে সকাল থেকে ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়া শুরু হয়েছে। শুক্রবার দুপুর নাগাদ নগরের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। নগরের সদর রোড, নবগ্রাম রোড, নিউ সার্কুলার রোড পানিতে তলিয়ে গেছে। মানুষের চলাচল থমকে গেছে। ঝড়টি ক্রমশ উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ায় বরিশাল থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের বরিশালের বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক ভুঁইয়া আজ দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আব্দুর রাজ্জাক ভুঁইয়া বলেন, সকাল ১০টার দিকে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পায়রা সমুদ্রবন্দর ৭ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় থাকবে। তবে বরিশাল নদীবন্দরে ৩ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিভিন্ন রুটের যাত্রীদের নদীবন্দরে এসে ফিরে যেতে দেখা গেছে। ভোলার উদ্দেশে নদীবন্দরে আসা যাত্রী হাফিজা বেগম বলেন, ‘মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছিলাম। বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়ে নদীবন্দরে এসে দেখি সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ। বাধ্য হয়ে আবার মেয়ের বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’

আরেক যাত্রী মো. আবির বলেন, ‘জরুরি কাজে মেহেন্দীগঞ্জের ভাসানচরে যেতে নদীবন্দরে এসেছিলাম। ঘাটে এসে দেখি লঞ্চ চলছে না।’

বরিশাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক আ. কুদ্দুস বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলি পায়রা বন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন। এ কারণে পায়রা বন্দরে ৭ নম্বর মহা-বিপৎসতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

খুলনায় গতকাল সন্ধ্যায় মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৮ মিলিমিটার। খালিশপুর মানসী মোড়ের হোটেল ব্যবসায়ী মুন্না শেখ বলেন, ‘এমন আবহাওয়ার কারণে সকাল থেকে বেচাবিক্রি ভালো হয়নি। রাস্তায় লোকজন তেমন নেই। এখন যে খাবার রান্না করা হয়েছে, তা শেষ হবে কি না চিন্তায় আছি। বিকেলে হোটেল বন্ধ রাখা ছাড়া কোনো উপায় নাই।’

খাওয়ার পানি সরবরাহকারী ইলিয়াস হাসেন বলেন, ‘নিম্নচাপের কারণে আমরা পানি ব্যবসায়ীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সারা দিন বৃষ্টি হওয়ায় খাওয়ার পানির চাহিদা কম। আর এতে করে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছি। এখন বাসায় শুয়ে-বসে সময় কাটানো ছাড়া কোনো কাজ নাই।’

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ বলেন, আজ শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি আঘাত হানতে পারে। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার হতে পারে। সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ মিলিমিটার এবং সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উপকূলের কাছাকাছি এসে আবার এটি দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপেও পরিণত হতে পারে।

খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলি মোকাবিলায় সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে পিরোজপুরে ভোর থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। জেলার কচা, বলেশ্বর, কালীগঙ্গাসহ বৃহৎ নদ-নদীগুলোতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে নিম্নাঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ। তবে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে তেমন যেতে দেখা যাচ্ছে না উপকূলসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষকে।

এনএইচ