tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
রাজনীতি প্রকাশনার সময়: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ১৩:৪৭ পিএম

পদত্যাগ না করলে সরকার পালানোর পথ পাবে না : মির্জা ফখরুল


fakrul-20231

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।


আমরা ভেবেছিলাম সরকার জনগণের দাবি মেনে নিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু তারা সেটা না করে জনগণের ওপর দমনপীড়ন চালাচ্ছে। একদিকে খাদ্যের চরম মূল্যস্ফীতি ও কাজের অভাব এবং কর্মসংস্থানের অভাব। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি। তারা যতই ভয়ভীতি দেখাক পদত্যাগ না করলে পালানোর পথ পাবে না।

রোববার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে ঢাকায় মহাসমাবেশ সফল উপলক্ষে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমানে ফ্যাসিস্ট লুটেরা ও বেআইনি সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি রসাতলে নিয়ে গেছে। তারা আবারও একতরফা নির্বাচন করতে চায়। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় সাজা দেওয়া শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত ১৩৬০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

তিনি বলেন, অবৈধ ও বেআইনি সরকারের প্রধানমন্ত্রী আইনজীবীদের ভবন উদ্বোধন করতে গিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কোনো নির্বাহী প্রধান বলতে পারেন না। তিনি বিচারাধীন মামলা নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে প্রমাণিত হলো যে আওয়ামী লীগ সরকার সরাসরি প্রভাব বিস্তার করে ফরমায়েশি রায় দিতে নির্দেশ দিচ্ছে। বিএনপি নেতাদেরকে সাজা দেওয়ার চক্রান্ত কার্যকরী করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার কেবল ক্ষমতায় থাকার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করছে। এমনকি আদালতকেও ব্যবহার করছে। আমরা দেশের সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি একটাই অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। কারণ এই সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা দেশে বিদেশে সবাই বলছেন। সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা একই কথা বলছেন। এটাই আমাদের মূল দাবি।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ এখন এই সরকারকে দেখতে চায় না। তারা পরিবর্তন চায়। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তা না বলে প্রতিদিন জনগণ রাজপথে আন্দোলন দানা বাঁধছে। তারা তাদের দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে আদায় করবে। আমাদের দ্বারা কিন্তু কোথাও সহিংস ঘটনা ঘটেনি। তবুও আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে মাত্র ৪ দিনেই ৪৮টি মামলা দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। এটা চরম দুর্ভাগ্যজনক। আসলে তারাও বিরোধী দলকে নির্মূল করার জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে এক হয়েছে।

তিনি মহাসমাবেশ প্রসঙ্গে বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর আমাদের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। সারা দেশের নেতাকর্মীরা আমাদের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন। পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে বলবো- কোথাও কিন্তু আপনারা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবেন না! এটা কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় হবে। ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে তাদের উদ্দেশ্য বোঝা যায় তারা বিনা কারণে আমাদের অফিসে আক্রমণ করেছে। আমরা আবারও বলছি- ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। এ জন্য নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা আমাদের থাকবে। আমরা কোনো নেতাকর্মীকে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিইনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা মনে করি এই সরকার বর্তমান সংসদ অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারে। অন্যথায় দেশে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার জন্য এই সরকারকেই দায় বহন করতে হবে। কারণ তারা জানে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। সেজন্যই তো বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে। এই সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপ হচ্ছে দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালাম সালাম, ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদ, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মাহবুবের রহমান শামীম, শামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, মো. শরীফুল আলম, হারুন অর রশিদ, খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, এসএ কবির জিন্নাহ, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন, সদস্য সচিব আবু ইউসুফ খান টিপু, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহিন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, সহ দপ্তর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির কমিটির সদস্য তারিকুল আলম তেনজিং, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, অঙ্গসংগঠনের মধ্যে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহাতাব, সদস্য সচিব মো. আবদুর রহিম, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, জাসাসের সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

এমবি