tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ২১:০৪ পিএম

প্রতিবেশী আরব রাষ্ট্রগুলোকে যে বার্তা দিচ্ছে ইসরায়েল


israel-arab-20240416205829

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে ঘিরে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে। এ পরিস্থিতিকে নিজেদের অনুকূলে রাখতে আরব প্রতিবেশী দেশগুলোকে আশ্বাসবার্তা দিচ্ছে ইসরায়েল।


সেই বার্তায় ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাব অবশ্যই দেবে ইসরায়েল কিন্তু সেই জবাব এমন ভাবে দেওয়া হবে না, যা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতায় সংকট সৃষ্টি করবে।

ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে আগে থেকেই চরম দ্বন্দ্ব ছিল ইরানের। সেই দ্বন্দ্ব আরও ব্যাপকভাবে বেড়েছে গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে।

চলমান এই বৈরিতার মধ্যেই গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিহত হন ১৩ জন। নিহতদের মধ্যে ইরানের সামরিক বাহিনীর এলিট শাখা ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) দুই জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মোহাম্মদ রেজা জাহেদী এবং মোহাম্মদ হাদি হাজি রাহিমিও ছিলেন।

হামলার দায় এখন পর্যন্ত ইসরায়েল স্বীকার করেনি। তবে সাক্ষ্য-প্রমাণ যেসব পাওয়া গেছে,তাতে হামলাটি যে আইডিএফ করেছিল— তা পরিষ্কার।

গত সপ্তাহে ইরানের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছিলেন— এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।

তারপর শনিবার রাত ও রোববার ইসরাইলকে লক্ষ্য করে ৩ শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরানের সামরিক বাহিনী। হামলায় হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি। বেশিরভাগ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলের ৯টি স্থাপনায় ইরানি ড্রোন আঘাত হানতে সফল হয়েছে বলে জানা গেছে।

ইরানের হামলায় বিধ্বস্ত একটি বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়ে মঙ্গলবার ইসরায়েলের সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল হারজি হালেভি সাংবাদিকদের বলেছেন, ইরানের এই হামলার জবাব অবশ্যই দেবে ইসরায়েল।

এদিকে হারজি হালেভি এই বার্তা দেওয়ার আগে থেকেই ইসরায়েলের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তায় ছিল রাষ্ট্রটির পশ্চিমা ও মধ্যপ্রাচ্যের মিত্ররা। আর তাদের চিন্তার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তিও ছিল।

কারণ, শনি ও রোববার ইরান ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে এবং সেগুলো লক্ষ্যে আঘাত হানার আগেই ধ্বংস করার ক্ষেত্রে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে সৌদি ও জর্ডানের বিমান বাহিনী এবং মধ্যপ্রাচ্যে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের যৌথ সামরিক কমান্ড।

রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে টেলিফোন করেছিলেন জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ। ফোনালাপে তিনি বলেছেন—জর্ডান এই দফায় ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে ঠিকই, কিন্তু তার দেশ কোনোভাবেই চায় না যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক। সেই সঙ্গে ইসরায়েলকে সংঘাত উসকে দেওয়া থেকে বিরত রাখতে যুক্তরাষ্ট্রকে তৎপর হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্রের ভূমিকায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি রাষ্ট্রকে দশকের পর দশক ধরে ইসরায়েলকে আর্থিক, সামরিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসছে ওয়াশিংটন।

সেই ওয়াশিংটনও ইরানে সম্ভাব্য হামলা নিয়ে সতর্কবর্তা দিয়েছে ইসরায়েলকে। বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বিবিসির মার্কিন অংশীদার এনবিসিকে জানিয়েছেন, আমরা আশা করছি যে ইসরায়েল যদি হামলা করেও, তাহলে ইরানের সামরিক বাহিনী বা সামরিক স্থাপনায় হামলা করবে। ইরানের ভূখণ্ডে নয়।

সূত্র : জেরুজালেম পোস্ট

এসএম