সাংবাদিকরা সোর্স প্রকাশ করতে বাধ্য নয় : হাইকোর্ট
Share on:
কোনো সাংবাদিক তার নিউজের তথ্যের সোর্স কারো কাছে প্রকাশ করতে বাধ্য নয় বলে হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন।
রোববার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন।
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে দেওয়া আছে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ও গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
আদালত রায়ে বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সাংবাদিকরা সঠিক তথ্য তুলে ধরে সমাজের অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যমের কাজ হলো জনগণকে সজাগ ও সচেতন করা।
আদালত বলেন, বর্তমান সময়ে প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। গণমাধ্যম দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি বিশেষের দুর্নীতি-অর্থ পাচার ফলাও করে তুলে ধরতে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে হলুদ সাংবাদিকতা কখনো সমর্থন করা যায় না।
আদালত আশা প্রকাশ করে বলেন, সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে গণমাধ্যমকে মনোযোগী হতে হবে। দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও জনস্বার্থ আছে— এ ধরনের সব সংবাদ সাংবিধানিকভাবে ও আইনগতভাবে সাংবাদিকরা তুলে ধরতে পারেন।
সাংবাদিকদের সাংবিধানিক ও আইনগতভাবে যে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে তাতে সাংবাদিকরা তাদের নিউজের তথ্যের সোর্স প্রকাশ করতে বাধ্য নন।
সাংবাদিকের কোনো সংবাদের বিষয়ে অভিযোগ থাকলে প্রেস কাউন্সিলের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ মার্চ দৈনিক ইনকিলাবে ‘২০ কোটিতে প্রকৌশলী আশরাফুলের দায়মুক্তি! দুর্নীতি দমনে দুদক স্টাইল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনা হলে আদালত রুল জারি করে দুর্নীতি দমন কমিশনের নথিপত্র তলব করেন। পাশাপাশি প্রতিবেদককে তার তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দেন। গত ২১ জুন আদালত রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন।
আজ সেই রায় প্রকাশ করলেন আদালত। রায়ে আদালত প্রকৌশলী আশরাফুলের দায়মুক্তির ঘটনা তদন্তে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ করে ছয় মাসে জন্য তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে ইনকিলাবের প্রতিবেদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এন