tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
জাতীয় প্রকাশনার সময়: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৯:৩০ পিএম

দেশে ৮ মাসে ৪৯৩ শিশু ধর্ষণের শিকার, গণধর্ষণ ৭২


215547103716rap

গত ৮ মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৯৩ জন কন্যাশিশু। এছাড়া ১০১ জন কন্যাশিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালানো হয়েছে।


এর মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার ৩২২ জন, গণধর্ষণের শিকার হয় ৭২ জন কন্যাশিশু, প্রতিবন্ধী কন্যাশিশু রয়েছে ৩৯ জন। এছাড়া প্রেমের অভিনব ফাঁদে ফেলে ৭০ জন কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

এছাড়া, চলতি বছরের গত ৮ মাসে মোট ৩২৯ জন কন্যাশিশু যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এই সময়কালে পর্নোগ্রাফির শিকার হয়েছে ৩০ জন কন্যাশিশু।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বেসরকারি সংস্থা জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম ‘কন্যাশিশুর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং প্রকাশনা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, এই সময়ে অ্যাসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ২ জন, অপহরণ ও পাচারের শিকার হয়েছে ১০৪ জন কন্যাশিশু। এর মধ্যে বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে ২৬০ জন, আর বাল্যবিয়ে বন্ধ হয়েছে ২১টি। এছাড়া বাল্যবিয়ে হয়েছে- কিন্তু অভিভাবকরা স্বীকারোক্তি দেয়নি এমন কন্যাশিশুর সংখ্যা ১ হাজার ৫২৫ জন। তবে, সংস্থাটি জানিয়ে ২০২২ সালের তুলনায় ২৩ সালে বাল্যবিয়ের সংখ্যা কমেছে ২৬ শতাংশ।

চলতি বছরের গত ৮ মাসে মোট ২৬ জন গৃহশ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন শারীরিক নির্যাতনের শিকার; ৩ জনকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে এবং ১০ জন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

গত ৮ মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয় ৩৬ জন কন্যাশিশু। এছাড়া নানামুখি চাপে এই সময়ে আত্মহত্যা করে আরও ১৮১ জন। গত ৮ মাসে ১৩৬ জন কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়। এর অন্যতম কারণ ছিল পারিবারিক দ্বন্দ্ব, আগে থেকে পারিবারিক শত্রুতা, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতন ইত্যাদি।

গত ৮ মাসে ১১ জন কন্যাশিশুকে বিভিন্ন স্থানে ফেলে রেখে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, এ বছর এখন পর্যন্ত ৩০৭ জন কন্যাশিশুর পানিতে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জন কন্যাশিশুর এবং ৪৭ জন কন্যাশিশুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশের ৭০টি দৈনিক পত্রিকা এবং মাঠ পর্যায় থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মোট ১৭টি ক্যাটাগরির আওতায় ৭০টি সাব-ক্যাটাগরিতে এসব তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের বিভিন্ন ধারায় নারী ভুক্তভোগীর ক্ষেত্রে মামলা হয়েছে সাড়ে ৮ হাজার। ৬৫ শতাংশের বেশি মামলা যৌতুক ও ধর্ষণের অভিযোগ। এই আইনে শিশু ভুক্তভোগী এমন মামলা হয়েছে ১ হাজার ৮৮৮টি।

২০২২ সালে উচ্চ আদালতের তথ্যানুযায়ী, ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের ৯৯টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৩১টি। সবচেয়ে বেশি বিচারাধীন মামলা রয়েছে ঢাকার ৯টি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে, এ সংখ্যা ১৮ হাজার ২৫টি।

নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে ৯টি সুপারিশও করেছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার, গুড নেইবারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মাঈনুদ্দিন মাইনুল, সেভ দ্যা চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের হেলথ অ্যান্ড নিউট্রেশন সেক্টরের কর্মকর্তা ড. লিমা রহমান, চাইল্ড রাইটস স্পেশালিস্ট অ্যান্ড অ্যাক্টিভিস্ট টনি মাইকেল গোমেজ, এডুকো বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি প্রমুখ।

এমবি