tnbd-logo tnbd-logo
tnbd-logo tnbd-logo-light
আন্তর্জাতিক প্রকাশনার সময়: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩০ এএম

পরিস্থিতি অমানবিক, গাজা উপত্যকা এখন ‘ডেথ জোন’: ডব্লিউএইচও


who-chief-1-20240222085453
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস (ফাইল ছবি)

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জার পাশাপাশি হামলা হচ্ছে হাসপাতালেও। এতে করে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছে।


অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। এমন অবস্থায় গাজা উপত্যকার পরিস্থিতিকে অমানবিক বলে উল্লেখ করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস। এমনকি গাজা উপত্যকা এখন ‘ডেথ জোন’ বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি অমানবিক বলে উল্লেখ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বুধবার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে ‘ডেথ জোন’ বা ‘মৃত্যু অঞ্চল’ বলে অভিহিত করেছেন।

ডব্লিউএইচও প্রধান এসময় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক সাহায্যের অবাধ প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বলেন, ‘গাজার স্বাস্থ্য ও মানবিক পরিস্থিতি অমানবিক এবং ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। গাজা একটি মৃত্যু অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। সেখানকার বেশিরভাগ অঞ্চল ধ্বংস হয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোন ধরনের পৃথিবীতে বাস করি যেখানে মানুষ খাবার এবং পান করার জন্য পানি পায় না, বা যেখানে মানুষ হাঁটতে পর্যন্ত পারে না কিংবা তারা তাদের সেবা-যত্নও পেতে পারে না? আমরা কোন ধরনের বিশ্বে বাস করি যেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা অসহায় মানুষের জীবন রক্ষায় কাজ করার সময় নিজেরাই বোমা হামলার ঝুঁকিতে থাকে?’

ডব্লিউএইচও প্রধান বলেন, ‘আমরা কোন ধরনের বিশ্বে বাস করি যেখানে হাসপাতালগুলো বন্ধ করে দিতে হবে কারণ রোগীদের বাঁচাতে সাহায্য করার জন্য আর কোনও জ্বালানি বা ওষুধ নেই। এবং এসব হাসপাতাল অবকাঠামোতে বারবার হামলা করছে সামরিক বাহিনী।’

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে অন্তত ২৯ হাজার ৩১৩ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭০ হাজার মানুষ। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বুধবার বলেন, ‘আমাদের এখন যুদ্ধবিরতি দরকার। বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ আমাদের দরকার। মানবতা অবশ্যই জয়ী হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গুরুতর অপুষ্টি নাটকীয়ভাবে বেড়েছে, কিছু অঞ্চলে এর হার এক শতাংশের নিচে থেকে ১৫ শতাংশেরও বেশি, যা আরও অনেক বেশি মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।’

তার ভাষায়, ‘যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে এবং সহায়তা সরবরাহ বিঘ্নিত হবে ততই এই সংখ্যা বাড়বে। আমরা আশঙ্কার সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) তাদের সহায়তা নিয়ে উত্তর গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না।’

এনএইচ