যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন নেতানিয়াহু: ব্লিঙ্কেন
Share on:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র যে সংশোধিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে তা মেনে নিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুসহ কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠকের পর এ কথা জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সূত্র: আল জাজিরা ও টাইমস অব ইসরায়েল।
ইসরায়েলে সফররত ব্লিঙ্কেন বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত সংশোধিত গাজা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। এখন হামাসকে অবশ্যই তা গ্রহণ করতে হবে।
তবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আসলে ইসরায়েলের গণহত্যা অব্যাহত রাখার জন্য আলোচনার নামে সময় নিচ্ছে। তারা ইসরায়েলকে ব্যাপক সুবিধা দেওয়া কোনো চুক্তি মেনে নেবে না।
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি চূড়ান্ত করার চেষ্টার অংশ হিসেবে গত রোববার ইসরায়েলে যান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
গত বছরের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে এটি ব্লিঙ্কেনের নবম সফর। গাজায় যুদ্ধবিরতি করা নিয়ে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে দীর্ঘদিনের ব্যবধান কমিয়ে আনার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র একটি সংশোধিত প্রস্তাব উপস্থাপনের কয়েকদিন পর ব্লিঙ্কেন এই সফরে গেলেন।
ইসরায়েলে পৌঁছার পর নেতানিয়াহু এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্লিঙ্কেন।
বৈঠক শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার খুবই গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। বৈঠকের পর নেতানিয়াহু নতুন মার্কিন প্রস্তাব সমর্থন করে একটি বিবৃতি ইস্যু করেছেন।
ব্লিঙ্কেন জোর দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার কাছে নিশ্চিত করেছেন যে ইসরায়েল গত সপ্তাহে দোহায় দেওয়া মার্কিন সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, এখন হামাসকে হ্যাঁ বলতে হবে। তারপর বিশেষজ্ঞ আলোচকেরা চুক্তি বাস্তবায়নের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন।
এদিকে হামাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ওসামা হামদান বলেছেন, গাজার যুদ্ধবিরতির জন্য আমাদের নতুন কোনো প্রস্তাবের দরকার নেইা। আমাদের প্রয়োজন ২ জুলাই আমাদের দেওয়া প্রস্তাব বাস্তবায়ন। উল্লেখ্য, হামাসের ওই প্রস্তাব নেতানিয়াহু প্রত্যাখ্যান করেছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে ১২০০ জনকে হত্যা করে হামাস। এছাড়া সেদিন ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে আসে। এরপর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালায় দখলদার দেশ ইসরায়েল। ১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯২ হাজারের বেশি।
এর মধ্যে কেবল গত বছরের নভেম্বরে একবার এক সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দি ইসরায়েলের জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার বিনিময়ে হামাস ১০৫ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল। এখনো হামাসের হাতে ১১১ জিম্মি আছেন বলে দাবি ইসরায়েলের, যাদের ৩৯ জনই মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর জানায়, তারা একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে, যা হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে ব্যবধান কমাতে সহায়ক।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে দোহায় সর্বশেষ আলোচনার পর মধ্যস্থতাকারীরা বলছেন, গত দুই দিনের আলোচনা গঠনমূলক এবং ইতিবাচক পরিবেশে পরিচালিত হয়েছে।
এনএইচ